পারফিউমের ব্যবহার দৈনন্দিন। বয়স, লিঙ্গ, কোনও ভেদ নেই। সকলেই পারফিউম ব্যবহার করে থাকেন। কারও আবার ফ্যাশন স্টেটমেন্টের সঙ্গে মানানসই বিদেশি পারফিউম। রয়েছে খটমট নামও। শরীরে সুগন্ধে যেমন আকর্ষণ বাড়ায় তেমনই পারফিউমে লুকিয়ে ভয়ঙ্কর বিপদও! ৮ থেকে ৮০, সকলের মধ্যেই পারফিউম ব্যবহারের প্রবণতা রয়েছে। সময়ের সঙ্গে সেটা আরও বাড়ছে। আর শীতকালে তো এর ব্যবহার আরও বেশি। কিন্তু বিপদটাকেও যে এড়াতে হবে! নিউ ইয়ার রেজিলিউশনে এই প্রসঙ্গটা যোগ হত কি?
JAMA নেটওয়ার্ক ওপেনে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুযায়ী, পারফিউমেও ফ্যালেটস-এর মতো কেমিক্যাল রয়েছে। নেলপলিশ, হেয়ারকেয়ার প্রোডাক্টেও ব্যবহার হয় এই কেমিক্যাল। এমনকি প্লাস্টিক প্রোডাক্ট তৈরি, খাবার প্যাকেজিংয়েও এর প্রয়োগ রয়েছে। সুতরাং, পুরোপুরি ভাবে এই কেমিক্যাল থেকে দূরে থাকা কার্যত অসম্ভব। একটা ভালো পারফিউম ব্যবহার করলে মুড যেমন ভালো হয়ে যায়, সঙ্গে তৈরি হয় বিপদও।
ফ্যালেটস-কেমিক্যালে কী সমস্যা?
এর জন্য শরীরে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়তে পারে। ইনসুলিন প্রতিরোধ, কার্ডিওভাসকুলার রোগ, এমনকি শিশুদের বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলে এই কেমিক্যাল। JAMA-র গবেষণা অনুযায়ী এর ফলে হাইপারঅ্যাক্টিভিটির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাদের গবেষণায় আরও ধরা পড়েছে, শিশুদের মধ্যে সমস্যা বেশি। তাদের অঙ্ক বুঝতে সমস্যা হয়। সুতরাং, এর ফলে যে একটা বিষয় পরিষ্কার, শিশুদের মস্তিষ্কেও প্রভাব ফেলে সুগন্ধীর মধ্যে থাকা কেমিক্যাল।
পাশাপাশি গবেষণায় আরও ধরা পড়েছে, শরীরের এন্ডোক্রাইন সিস্টেমে সমস্যা হয়ে থাকে। যার ফলে প্রজননের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলে। এটা যে যথেষ্ট চিন্তার বিষয়, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। হরমোন, পিটুইটারি সম্পর্কিত সমস্যা, থাইরয়েড, মুড সুইংও হতে পারে।
এর থেকে দূরত্ব বজায় রাখার উপায়?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ছোট ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমে বড় ক্ষতি এড়ানো যেতে পারে। সুগন্ধীর ক্ষতিকর প্রভাব যদি উপলব্ধি করে থাকতে পারেন, সে ক্ষেত্রে সহজ উপায় প্যাথেলেট কেমিক্যাল নেই, এমন প্রোডাক্ট ব্যবহার করা। রাতারাতি এই বদল সম্ভব নয়। দীর্ঘদিনের চেষ্টায় অভ্যেস হতেই পারে। তেমনই জামাকাপড় ধোয়ার ক্ষেত্রেও সুগন্ধীযুক্ত ডিটারজেন্ট বা অন্য প্রোডাক্ট থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।