এখনও পর্যন্ত যতজন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকেই ক্লান্তির কথা বলেছেন। এই কোভিড ক্লান্তির ঘটনা কিন্তু খুবই সাধারণ লক্ষণ। এমনকী কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরও রয়ে গিয়েছে এই সমস্যা। তবে এই কোভিড ক্লান্তি কিন্তু নির্ভর করে বয়স এবং লিঙ্গের উপর। কিছু জনের ক্ষেত্রে তা কয়েক মাস পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হতে পারে। তবে এই কোভিড ক্লান্তি ছাড়াও বর্তমানে চিকিৎসকেরা আরও একটি ক্লান্তির কথা তুলে ধরেছেন। যা মূলত আসছে ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ নেওয়ার পর। এমন অনেক বয়স্ক মানুষ আছেন যাঁরা ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ক্লান্তি বোধ করছেন। যে কারণে কিন্তু বুস্টার ডোজের প্রতি আগ্রহ কম। এছাড়াও এই বুস্টার ডোজ নেওয়ার পর শরীরে যে সব ক্লান্তি দেখা যাচ্ছে তার তুলনায় কোভিড ক্লান্তি অনেকটাই পৃথক।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে একাধিক পরিবর্তন আসে। মেটাবলিজম কমে যায়, পেশির শক্তি ক্ষয়, হরমোনের অসামঞ্জস্যতা দেখা যায় এছাড়াও সুগার-প্রেসার সহ একাধিক সমস্যা থাকে। সেই সঙ্গে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উদ্যোম কমে আসে। কম বয়সে শরীরে-মনে যতখানি উদ্যোগ থাকে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু তা হারিয়ে যায়। ফলে প্রবণীরা কোনও কিছুতেই আর আগের মত আনন্দ পান না। এই মন খারাপ, বিষন্নতা, উদ্যোগ হারিয়ে যাওয়া লকডাউনের সময়ে আরও বেশি করে দেখা গিয়েছিল। চার দেওয়ালের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ বন্দি থাকার ফলে শরীরে এসে জুড়ে বসেছিল একাধিক সমস্যা।
আর টিকা নেওয়ার পর এই ক্লান্তি কিন্তু কোভিড ক্লান্তির থেকে অনেকটাই পৃথক। সম্প্রতি কোভিডের বুস্টার ডোজ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। আর সেখানেই কিন্তু উঠে আসে এই সমস্যার কথা। সেই সঙ্গে বুস্টার ডোজ প্রসঙ্গে তেমন কোনও সচেতনতামূলক অভিযানও চালানো হয়নি। ফলে মানুষের মধ্যে এই টিকা নিয়ে উদ্যোগ কিন্তু বেশ কম। তবে এই ভ্যাকসিন পরবর্তী ক্লান্তি বিষয়ে আরও বিশদে গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। সেই সঙ্গে যাঁদের বয়স ৫০-এর উপরে তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা দিচ্ছে এই সমস্যা। যে কারণে বয়স্করা ভয় পেয়ে বুস্টার ডোজ নেওয়ার আগ্রহ কম দেখাচ্ছেন। যার ফলে কিন্তু বাড়ছে কোভিড সংক্রমণের ঝুঁকি।
কিন্তু কেন বুস্টার ডোজ নেওয়ার পর ক্লান্তি বাড়ছে, শরীর আগের তুলনায় কমজোরি হয়ে পড়ছে-এই বিষয়টি ভাবাচ্ছে চিকিৎসকদের। মার্চ মাসে প্রকাশিত, ফ্রন্টিয়ার্স ইন ইমিউনোলজি জার্নালে এই সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছে। আর এরপরই বিষয়টি নিয়ে বেশি ভাবিত হয়ে পড়েন চিকিৎসকরা। তবে এ বিষয়ে আরও বিশদ গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। এই সমস্যা প্রাপ্তবয়সকদের মধ্যেই কিন্তু সবচেয়ে বেশি। কোভিডের সংক্রমণ এখনও ফুরিয়ে যায়নি। মাঝেমধ্যেই তা ঘুরেফিরে আসছে। ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে ভ্যাকসিন আবশ্যক। নইলে বাড়বে কোভিড মৃত্যুর সংখ্যা এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: Multivitamin: এই ৫ মাল্টিভিটামিন হোক আপনার রোজকার সঙ্গী, বলছেন এক্সপার্টরা