ভদ্রক: করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express) দুর্ঘটনায় আহত বাংলার অনেকেই ওড়িশার (Odisha) ভদ্রক হাসপাতালে ভর্তি। সোমবার সেখান থেকে ১২ জনকে রাজ্যে (Bengal) ফেরানো হল। ওড়িশার হাসপাতালে কি সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না করমণ্ডল দুর্ঘটনায় আহত বাংলার যাত্রীরা? এমন প্রশ্ন উঠছে। যদিও এই সমস্ত প্রশ্ন খারিজ করে দিচ্ছেন ভদ্রক হাসপাতালে ভর্তি বাংলার আহত যাত্রীরা। তাঁদের দাবি, স্বজনদের পাশে পেতেই তাঁরা কলকাতায় স্থানান্তরিত হতে চাইছেন।
অভিশপ্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেসে বাংলার যে সমস্ত যাত্রী ছিলেন, তাঁদের অনেকেই ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাচ্ছিলেন। তাঁদের মধ্যে যাঁরা প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন, তাঁরা ভদ্রক হাসপাতালে ভর্তি। যেমন মুর্শিদাবাদের ধীরেন সরকার চেন্নাইয়ে কাজ করতে যাচ্ছিলেন। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও ডান পায়ের মালাইচাকি গুঁড়িয়ে গিয়েছে। বর্তমানে তিনি ভদ্রক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কলকাতায় ফেরার জন্য ইতিমধ্যে তিনি আবেদন জানিয়েছেন। তবে ভদ্রক হাসপাতালের পরিষবায় খুব খুশি তিনি। হাসপাতালের বেডে শুয়েই চিকিৎসক থেকে নার্সদের প্রশংসা করেন ধীরেন সরকার। TV9 বাংলার মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “ওড়িশার মানুষ খুবই ভাল। এই হাসপাতালের পরিষেবা, খাবার খুব ভাল। চিকিৎসক, কর্মীদের ব্যবহারও ভাল।” তাহলে কলকাতায় যেতে চাইছেন কেন? ধীরেনবাবুর কথায়, “কলকাতায় ফিরতে পারলে পরিবারের লোকেদের দেখতে পাব, তাঁদের কাছে পাব। সেজন্যই রাজ্যে ফিরতে চাই।” কলকাতায় ফেরার আগে ভদ্রক হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মীদের ধন্যবাদ জানাতেও ভোলেননি তিনি।
এদিকে, ওড়িশার হাসপাতালগুলির মর্গে পরিচয়হীন অনেক দেহ পড়ে রয়েছে। এদিন দুপুর পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, ১৯৩টি দেহ শনাক্ত করা যায়নি। সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে মৃতদেহের সংখ্যাও বদলাচ্ছে। কেননা, পরিচয়হীন মৃতদেহের স্তূপ থেকে একদিকে যেমন দেহ শনাক্ত করে সেগুলি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, তেমনই অন্যদিকে পরিচয়হীন নতুন দেহ মর্গে ঢুকছে। ওই সমস্ত দেহের মধ্যে বাংলার কেউ রয়েছে কি না তা জানতে এদিন রাজ্য প্রশাসনের ৪ আধিকারিক ভুবনেশ্বর এইমস-এ পৌঁছেছেন। রবিবার পর্যন্ত রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকেরা চারভাগে বিভক্ত হয়ে কটক, ভুবনেশ্বর, বালাশোর ও ভদ্রকের হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেই সমস্ত জায়গার হাসপাতালে মৃতদের মধ্য থেকে বাংলার যাত্রীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করেন তাঁরা। এদিন বাংলার নিখোঁজ যাত্রীদের ছবি নিয়ে সরাসরি ভুবনেশ্বর এইমস-এ পৌঁছন তাঁরা।