
নয়াদিল্লি: বাসবরাজের মতো শীর্ষ নেতাদের মৃত্যু। কিষেণজীর স্ত্রীয়ের মতো কমান্ডারদের আত্মসমর্পণ করে জীবনের মূল স্রোতে ফেরা। এই প্রতিটি ঘটনাই দিনশেষে ভারতের বুকে দশক বেঁধে ‘বেঁচে থাকা’ সশস্ত্র মাওবাদী ভাবধারাতেও একটা দাঁড়ি টেনে দিয়েছে। যা আবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মাওবাদী-শূন্য দেশ গড়ার প্রতিশ্রুতিকেও আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে সাফল্যের পথে।
রবিবার ছত্তীসগঢ়ের কাঁকের জেলায় একসঙ্গে আত্মসমর্পণ করলেন ২১ জন মাওবাদী। সঙ্গে পুলিশের হাতে ১৮টি আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দিয়েছেন তাঁরা। যার মধ্যে রয়েছে একে-৪৭-র মতো আধুনিক রাইফেলও। সুন্দরাজ পাট্টলিনগম নামে এক পুলিশ কর্তা বিভিন্ন সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বস্তার, যা একসময় মাওবাদীদের ‘দূর্গ’ ছিল বললেই চলে, সেখানে আয়োজিত ‘পুনা মার্গেম’ উদ্যোগের আওতায় নিজেদের অস্ত্র সমর্পণ করে দিয়েছেন এই ২১ জন মাওবাদী। যাঁদের মধ্যে ১৩ জন আবার মহিলা।
ওই পুলিশকর্তার কথায়, ‘সশস্ত্র, চরমপন্থী ভাবধারাকে পিছনে ফেলে জীবনের মূলস্রোতে ফেরার আবেদন জানিয়েছিলেন এই মাওবাদীরা। এই আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে ১৩ জন মহিলা সদস্য রয়েছেন। এছাড়াও, এই ২১ জনের মধ্যে ৪ জন ছিলেন নিষিদ্ধ মাওবাদী গোষ্ঠীর ডিভিশনাল কমিটির সদস্য ও ৯ জন ছিলেন এরিয়া কমিটির সদস্য়।’
আত্মসমর্পণ করার পাশাপাশি একাধিক আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন মাওবাদীরা। সূত্রের খবর, আত্মসমর্পণকারীদের থেকে একটি একে-৪৭, চারটি এসএলআর, দু’টি অ্যাসোল্ট রাইফেল, ৬টি ৩০৩ রাইফেল, দু’টি সিঙ্গল শট রাইফেল এবং একটি ব্যারেল গ্রেনেড লঞ্চার উদ্ধার করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই এই মাওবাদী আত্মসমর্পণের ঘটনাকে সরকারের জয় বলেই উল্লেখ করেছেন ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই। এদিন তিনি বলেন, ‘দেশজুড়ে বামপন্থার অবসান ঘটছে, মাওবাদীরা বন্দুক ছেড়ে জীবনে মূল স্রোতে ফিরছেন।’ প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে ছত্তীসগঢ়ে বিজেপি সরকার গঠনের পর থেকে এখনও পর্যন্ত ২ হাজার ২০০ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন। এছাড়াও সাম্প্রতিক অতীতেই শুধুমাত্র বস্তার এলাকাতেই মাওবাদী আর্দশকে ত্যাগ করে আত্মসমর্পণ করেছেন ৩০০-এর অধিক মাওবাদী।