Chittisingpura Massacre: ‘গুরুদ্বারের সামনে দাঁড় করিয়ে ৩৫ শিখকে গুলি করল জঙ্গিরা’
Chittisingpura Massacre: গুরুদ্বারের মাঝে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিল ৩৫ জনের। সেখানে মৃতদের ছবি টাঙানো রয়েছে। গ্রামের গুরুদ্বারের দেওয়ালে গুলির দাগের জায়গাগুলি চিহ্ন দেওয়া রয়েছে।

তুষার ঘটক
পহেলগাঁও: পাহাড়ের মাঝে ছোট্ট ছবির মতো সুন্দর একটা গ্রাম। মূলত শিখ ধর্মাবলম্বীরা বাস করেন। আজ থেকে নয়। সেই রাজা গুলাব সিংহের আমল থেকে। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর ২৫ বছর আগের সেই ভয়ঙ্কর রাতের কথা মনে পড়ছে চিট্টিসিংপুরা গ্রামের বাসিন্দাদের। ২০০০ সালের ২০ মার্চ শিখ ধর্মাবলম্বী ৩৫ জনকে এলোপাথাড়ি গুলি করে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। সেদিনের সেই ভয়ঙ্কর রাতের স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছেন নানক সিং। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর সেদিনের ঘটনার কথা ভেবে শিউরে উঠলেন তিনি।
পহেলগাঁও থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে চিট্টিসিংপুরা গ্রাম। মূলত কৃষিকাজ আর ছোটখাটো ব্যবসা করেন অনন্তনাগ জেলার এই গ্রামের বাসিন্দারা। এই এলাকার সবচেয়ে বড় শিখ গ্রাম। পহেলগাঁওয়ে বেছে বেছে যেভাবে হিন্দুদের হত্যা করা হয়েছে, সেকথা জানার পর ২৫ বছর আগের স্মৃতি ভেসে উঠেছে এই গ্রামের বাসিন্দাদের মনে। সেদিনও শুধু শিখ ধর্মাবলম্বীদের খুন করা হয়েছিল।

সেদিনের ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে শিউরে উঠলেন নানক সিং
কী হয়েছিল ২০০০ সালে ২০ মার্চ? সেদিন ভাগ্যের জোরে বেঁচে যান নানক সিং। সেই রাতের ঘটনা এখনও যেন তাঁর চোখের সামনে ভাসছে। বললেন, গ্রামে দুটি গুরুদ্বার রয়েছে। সেই দুটি গুরুদ্বারের সামনেই ৩৫ জনকে গুলি করে মারা হয়। বলতে বলতে গলা বুজে আসছিল তাঁর। তিনি বলেন, “সেদিন সেনার পোশাক পরে এসেছিল হামলাকারীরা। মুখ ঢাকা ছিল। গ্রামের পুরুষদের তারা দুটি গুরুদ্বারের সামনে দাঁড় করায়। একটি গুরুদ্বারের সামনে আমরা ১৯ জন ছিলাম। অন্য একটি গুরুদ্বারের সামনে ১৮ জন। আমাদের গুরুদ্বারের সামনে দাঁড় করিয়েই এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। আমারও গুলি লেগেছিল। পড়ে যাই। ওরা ভেবেছিল আমি মারা গিয়েছি। চলে যায়।”

চিট্টিসিংপুরা গ্রাম
কারা হামলা চালিয়েছিল? কেন হামলা চালিয়েছিল? এসব কিছুই বুঝতে পারেননি বছর সত্তরের নানক সিং। তিনি বলেন, “তারপর আর কখনও হামলা হয়নি। আমরা সবাই একসঙ্গে ভালই রয়েছি। কিন্তু, মাঝে মাঝে কেন এমন হামলা হয়, বুঝতে পারি না।” ২৫ বছর আগের ওই হামলাতে উঠে আসে লস্কর-ই-তৈবার নাম। তবে হামলার মাস্টারমাইন্ড এখনও অধরা।

গুরুদ্বারের দেওয়ালে গুলির দাগগুলি চিহ্ন দেওয়া রয়েছে
গুরুদ্বারের মাঝে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিল ৩৫ জনের। সেখানে মৃতদের ছবি টাঙানো রয়েছে। গ্রামের গুরুদ্বারের দেওয়ালে গুলির দাগের জায়গাগুলি চিহ্ন দেওয়া রয়েছে। সেই চিহ্নগুলি দেখিয়ে বৃদ্ধ খাজন সিং বললেন, সেদিন গ্রামের বাইরে ছিলেন তিনি। তাই হয়তো প্রাণে বেঁচেছেন। বললেন, “দমকলে কাজ করতাম। নাইট ডিউটি ছিল। তাই বেঁচে গিয়েছিলাম।” পহেলগাঁওয়ের হামলা ২৫ বছর আগের স্মৃতি উসকে দিয়েছে চিট্টিসিংপুরা গ্রামের বাসিন্দাদের। একসঙ্গে মিলেমিশে তাঁরা থাকেন। তার মাঝে কেন এমন জঙ্গি হামলা হয়, সেকথা ভেবেই দীর্ঘশ্বাস ফেললেন খাজন সিংরা।

খাজন সিং





