
নয়া দিল্লি: বাড়িতে দুধ বা ডিম নেই? কিংবা হঠাৎ অনুষ্ঠান পড়েছে, কিছু উপহার চাই। মোবাইল খুলে অর্ডার করলেই হল। ১০ মিনিটেই দোরগোড়ায় হাজির হবে সেই জিনিস। জামাকাপড় থেকে ঘরে টুকিটাকি- সবই এখন পাওয়া যায় অনলাইন ইন্সট্যান্ট ডেলিভারি সাইট (Instant Delivery Site)-গুলিতে। তবে এই ১০ মিনিটের ডেলিভারি কি এবার বন্ধ হয়ে যাবে? আপ সাংসদ সেই দাবিই করলেন।
চলছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। সেখানেই ১০ মিনিটের ডেলিভারি সার্ভিস বন্ধ করার জন্য আবেদন জানালেন আম আদমি পার্টির সাংসদ রাঘব চাড্ডা (Raghav Chadha)। শুক্রবার রাজ্যসভায় তিনি বলেন যে ১০ মিনিটের এই ডেলিভারি সার্ভিস গিগ ওয়ার্কারদের প্রতি অত্যাচার। এই ১০ মিনিটের ডেডলাইন অনুসরণ করতে গিয়ে তাদের অসুরক্ষিত পরিস্থিতিতে কাজ করতে হচ্ছে।
রাজ্যসভায় জিরো আওয়ারে আপ সাংসদ বলেন যে ডেলিভারি কর্মীরাও মানুষ। তাদেরও পরিবার রয়েছে, তারা কোনও মেশিন নয়, যারা নন-স্টপ স্পিডে কাজ করে যাবেন। রাঘব চাড্ডা বলেন, “আমি বলতে চাই যে এই মানুষেরা রোবট নয়। তারাও কারোর বাবা, কারোর স্বামী, ভাই বা ছেলে। সংসদের উচিত তাদের কথা ভাবা। তাই ১০ মিনিট ডেলিভারির এই অমানবিকতা বন্ধ করা উচিত।”
আপ সাংসদ বলেন যে গ্রাহকরা ইন্সট্যান্ট ডেলিভারিতে উপকৃত হলেও, যারা এই ডেলিভারি সম্ভব করছেন, তাদের কথাও ভাবা উচিত। জ়্যোমাটো, সুইগি, ব্লিঙ্কিট, জ়েপ্টো, ওলা, উবার ও অন্যান্য পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার কর্মীরা দেশের অর্থনীতির অদৃশ্য চালিকাশক্তি। প্রতিটা অর্ডার বা নোটিফিকেশনের পিছনে ওই কর্মীর পরিশ্রম অদেখাই রয়ে যায়। তাদের পরিস্থিতি দিনমজুরদের থেকেও খারাপ।
কী কী প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হয় সকল গিগ ওয়ার্কারদের, তার তালিকা তুলে ধরেন আপ সাংসদ। একদিকে যেমন অস্বাভাবিক গতিতে তাদের ডেলিভারি করতে হয়, তেমনই অসুরক্ষিত পরিবেশে বা অসুরক্ষিতভাবে ডেলিভারি করতে হয়। অনেক ডেলিভারি এজেন্টই পেনাল্টি বা জরিমানার ভয়ে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করেন। রেটিং কমে যাওয়ার ভয়ে নিজেদের প্রাণের ঝুঁকি নিতেও ভাবেন না। যে কোনও আবহাওয়ায় ডেলিভারি এজেন্টদের দীর্ঘ সময় বাইরে কাটাতে হয়। তাদের কোনও ইন্সুরেন্সও থাকে না। এছাড়া কাস্টমারদের হেনস্থা তো লেগেই থাকে। সেই কারণেই রাঘব চাড্ডা এই ১০ মিনিটের পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার আবেদন জানালেন।