নয়া দিল্লি: বীরভূম সফরে অমিত শাহের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আসনে বসার বিতর্কে নয়া মোড় বিশ্বভারতীর উপচার্যের চিঠিতে। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী একটি চিঠি দিয়ে এ সংক্রান্ত সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। আর তাঁর চিঠিকেই হাতিয়ার করে এবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে ‘ক্লিনচিট’ দিলেন বিজেপি-র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। সঙ্গে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদ্বয় জওহরলাল নেহেরু ও রাজীব গান্ধীকেও এক হাত নিয়েছেন তিনি। এমনকি, অমিত শাহ এ দিন রাজ্যসভায় নিজে গোটা বিতর্কে দাঁড়ি টানতে চেয়ে সংসদের বক্তব্যে সাফাই দেন।
বহরমপুরের পাঁচবারের সাংসদকে উদ্দেশ্য করে অমিত বলেন, “গতকাল নিজের বক্তব্যে অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেছিলেন যে আমি নাকি শান্তিনিকেতনে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আসনে বসেছি। বিশ্বভারতীর উপাচার্যের একটি চিঠি আমার কাছে রয়েছে। এই ধরনের কোনও ঘটনা যে ঘটেনি তা পরিষ্কারভাবে জানানো হয়েছে। আমি একটা জানালার পাশেই বসেছিলাম যেখানে সকলেই বসতে পারেন।” তাঁর আরও সংযোজন, “আমি ওই আসনে না বসলেও দুটো ছবি রয়েছে যেখানে গুরুদেবের আসনে পণ্ডিত নেহরু ও রাজীব গান্ধীকে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে।”
ডিসেম্বর মাসে বীরভূম সফরে অমিত শাহ যখন বিশ্বভারতী পরিদর্শন গিয়েছিলেন, তখন খোদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আসনে বসেছেন শাহ, এই মর্মে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিকভাবে বিস্তর জলঘোলাও হয়। তৃণমূল ও কংগ্রেস উভয় দলের পক্ষ থেকে থেকে রবীন্দ্র-গরিমায় আঘাত হানার অভিযোগ তোলা হয়। এমনকি, বহরমপুরের সাংসদ তথা লোকসভার কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীও সোমবার এই অভিযোগ তোলেন খোদ সংসদে। এরপরই সোমবার যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে অধীরকে পালটা চিঠি দিয়েছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য।
চিঠিতে বিদ্যুৎবাবু অধীরের দাবি উল্লেখ করে লেখেন, “দুর্ভাগ্যবশত আপনি প্রকৃত সত্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। অতীতেও উত্তরায়ণ সফরের সময় প্রাক্তন আচার্য পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি শ্রীমতি প্রতিভা পাটিল, প্রণব মুখোপাধ্যায়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অন্যান্যরা ওই স্থানে বসেছেন। এই এলাকাটি আসলে একটি জানালার ধারে থাকা অংশ যার মধ্যে বালিশ রাখা হয়েছে। আসল সত্যের বিষয় সংক্রান্ত সমস্ত নথি আপনার হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে গুরুদেবের বসার জায়গা তো দূর, এটা আসলে কোনও চেয়ারই নয়।”
VC of Viswa Bharati writes to Adhir Ranjan Choudhary, clarifying that his claim on the floor of Parliament that HM used Tagore’s chair during his visit, is false and misleading…
Here Nehru can be seen on the actual desk of Tagore and Rajiv Gandhi enjoying tea on Tagore’s sofa! pic.twitter.com/doevifLs8g
— Amit Malviya (@amitmalviya) February 9, 2021
উপাচার্যের এই চিঠির প্রতিলিপি টুইট করে সঙ্গে নেহেরু ও রাজীব গান্ধীর ছবি জুড়ে দিয়ে পালটা কটাক্ষের পথে হেঁটেছেন অমিত মালব্য। অধীরকে লেখা উপাচার্যের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে তিনি লেখেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিজের ডেস্কে নেহেরু বসেছিলেন এবং রাজীব গান্ধী গুরুদেবের সোফায় বসে চা পান করেন।”
আরও পড়ুন: তৃণমূল বাদে অন্যকে ভোট মানেই বিজেপির দিকে, বহরমপুরে মমতার সাফ বার্তা