Mi 17 V5 Helicopter: ভিতরে আছে রকেট-মিসাইল, ১৩ হাজার কেজি ওজন নিয়ে উড়তে পারে অনায়াসে, কেমন এই Mi 17 V5?
Mi 17 V5 Helicopter: দুপুরেই তামিলনাড়ুর কন্নুরে প্রতিরক্ষা প্রধান বিপিন রাওয়াত সহ ১৪ যাত্রীদের নিয়ে ভেঙে পড়ে সেনা বাহিনীর হেলিকপ্টার। শেষ খবর পাওয়া অবধি, ১৪ জন যাত্রীর মধ্যে ১৩ জনেরই মৃত্যু হয়েছে। মাঝ আকাশ থেকে পড়ে ঝলসে যায় রাশিয়ার তৈরি Mi 17 V5।

সুলুর এয়ার বেস থেকে ওয়েলিংটন যাওয়ার পথে তামিলনাড়ুর কুন্নুরে ভেঙে পড়েছে এমআই ১৭ হেলিকপ্টার। আর সেই হেলিকপ্টারে ছিলেন চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত। এখনও পর্যন্ত ওই দুর্ঘটনায় ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। দুর্ঘটনার পিছনে ঠিক কী কারণ, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, যে হেলিকপ্টারে সস্ত্রীক বিপিন রাওয়াত ছিলেন, সেটি বিশ্বের অন্যতন আধুনিক সেনা হেলিকপ্টার। রাশিয়ার তৈরি এই কপ্টারে রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, মিসাইল- রকেটের রণসজ্জা। দুর্ঘটনা যাতে এড়ানো যায়, তার অনেক বন্দোবস্তই আছে।
কী এই Mi-17V-5 হেলিকপ্টার?
রাশিয়ার Mi-8/17 সিরিজের অন্যতম হেলিকপ্টার এটি। পারদর্শিতায় এর জুড়ি মেলা নাকি ভার। দামও তুলনায় কম। তাই এই হেলিকপ্টারের ওপর আস্থা রাখে ভারত সহ একাধিক দেশ। রুশ সংস্থা কাজান হেলিকপ্টারস এই চপার তৈরি করে। রাশিয়ার কাজানে রয়েছে তাদের কারখানা।
ভারতের হাতে কতগুলি Mi-17V-5 আছে?
একাধিক কাজে ব্যবহার করা যায় এই হেলিকপ্টার। তাই এর চাহিদাও অনেক বেশি। ২০০৮ সালে রাশিয়ান সংস্থার থেকে কেনার জন্য ৮০ টি Mi-17V-5 হেলিকপ্টার অর্ডার দিয়েছিল ভারত। ২০১১ থেকে সেগুলি একে একে ভারতে আসতে শুরু করে। ২০১৮-র মধ্যেই ভারতে চলে আসে সবকটি হেলিকপ্টার।
কী কাজে লাগে হেলিকপ্টার?
মূলত এটি একটি ট্রান্সপোর্ট হেলিকপ্টার। অর্থাৎ এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় জওয়ানদের নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। সেই সঙ্গে অস্ত্র বা সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয় মালপত্রও বহন করতে পারে এটি। পাশাপাশি, আগুন নেভানোর, কনভয়ে নিরাপত্তা দেওয়া, উদ্ধারকাজের মতো একাধিক ক্ষেত্রে এই হেলিকপ্টার ব্যবহার করা সম্ভব।
রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি
সাধারণত এই এমআই ১৭ হেলিকপ্টারে থাকে ক্লিমভ টিভি৩-১১৭ভিএম (TV3-117VM) বা ভিকে- ২৫০০ (VK-2500) ইঞ্জিন। সধারণত ক্লিমভ টিভি৩-১১৭ভিএম-এর ক্ষমতা ২১০০ হর্সপাওয়ার আর ভিকে- ২৫০০- এর ক্ষমতা ২৭০০ হর্সপাওয়ার।
হেলিকপ্টারটি ২৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে উড়তে পারে। একবার জ্বালানি ভরার পর একটানা ৫৮০ কিলোমিটার উড়তে পারে এটি। আর যদি মাঝ আকাশে জ্বালানি ভরার জন্য অক্সিলারি ফয়েল ট্যাঙ্ক ব্যবহার করা হয়, তাহলে এটি উড়তে পারে ১,০৬৫ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ ৬০০০ মিটার উচ্চতায় উড়তে পারে এটি।
কী বৈশিষ্ট্য রয়েছে?
চপারের ভিতরে বিশালাকার কেবিন। একসঙ্গে ১৩ হাজার কেজি ওজন বহন করতে সক্ষম এটি। ৩৬ জন জওয়ানকে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় নিয়ে যেতে পারে। যে কোনও আবহাওয়ায় উড়তে সক্ষম এটি। নীচে পাহাড় থাকুক বা সমুদ্র, ঘন জঙ্গল অথবা মরুভূমি, কপ্টারের গতিতে কোনও প্রভাব পড়ে না।
আধুনিক ককপিট
এতে রয়েছে কাঁচে ঘেরা ককপিট। রাতের অন্ধকারে যাতে সহজে উড়তে পারে তার জন্য রয়েছে বিশেষ ক্যামেরা। ককপিটে আছে অটো পাইলট সিস্টেম, অর্থাৎ পাইলটের কোনও সমস্যা হলেও তা সামাল দিতে পারে এটি।
Mi-17V-5 হেলিকপ্টারের রণসজ্জা
ট্রান্সপোর্ট হেলিকপ্টার হলেও এটি নেহাত সাদামাটা নয়। যদি কখনও যুদ্ধ পরিস্থিতি মাঝে জওয়ানদের হেলিকপ্টার থেকে নামতে হয়, তার জন্য এতে রয়েছে একাধিক অত্যাধুনিক অস্ত্র। রয়েছে, স্ট্রাম-ভি মিসাইল, এস-৮ রকেট, ২৩ এমএম মেশিন গান, পিকেটি মেশিন গান, একেএম সাব মেশিন গান।
