মুম্বই: ঠিকুজি কুষ্ঠি মিলছে না (Astrological Incompatibility)। তাই বিয়ে করলেও সে সম্পর্ক টেকানো কঠিন হবে। এই অজুহাত দেখিয়েই প্রেমিকার সঙ্গে সহবাসের পরও বিবাহ বন্ধনে জড়াতে চাননি মুম্বইয়ের এক যুবক। এরপরই ওই তরুণী মুম্বইয়ের বোরিভালি পুলিশের দ্বারস্থ হন। বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ তোলেন ওই যুবকের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি বোম্বে হাইকোর্টে (Bombay High Court) সেই মামলা ওঠে। বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কুণ্ডলী মিলছে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েও বিয়ের সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসার কোনও জায়গাই নেই।
একই হোটেলে কাজ করার সুবাদে এক তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয় এক যুবকের। সেই সম্পর্ক ধীরে ধীরে নতুন নতুন রূপ নিতে শুরু করে। পরিচিত থেকে বন্ধু, এর পর প্রেম। কিছুদিনের মধ্যেই সেই প্রেমে স্থান পায় শারীরিক ঘনিষ্ঠতা। এরপরই শুরু হয় গোলমাল।
কেস ডিটেইল বলছে, ২০১২ সাল থেকে অভিযুক্ত ও অভিযোগকারী একে অপরকে চেনেন। সেই সময় একটি পাঁচ তারা হোটেলে দু’জনে কাজ করতেন। অভিযোগকারীর দাবি, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার ওই যুবক তাঁর সঙ্গে শারীরিক ঘনিষ্ঠতা তৈরি করেন। অভিযোগ, এরপর ওই তরুণী যুবককে বিয়ে করতে বলায় তিনি বেঁকে বসেন।
এদিকে ওই তরুণী জানতে পারেন, তিনি সন্তানসম্ভবা। এরপর ওই যুবককে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু যুবক কিছুতেই এই বিয়েতে সম্মতি দেননি। অভিযোগ, ওই যুবক পাল্টা তরুণীকে বলেন, মাত্র ৩২ বছর বয়সে তিনি বিয়ে-সংসারের জন্য প্রস্তুত নন। তরুণীকে গর্ভের সন্তান ‘অ্যাবর্ট’ করার পরামর্শও দেন।
এরপর ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ওই যুবক পুরোপুরি তরুণীকে এড়িয়ে যেতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। এরপরই পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই তরুণী। পুলিশ ওই যুবককে ডেকেও পাঠায়। সেখানে অবশ্য তিনি বলেছিলেন, ২০১৩ সালেই বিয়ে করবেন তাঁরা।
এরপরই একেবারে টানটান নাটুকে চিত্রনাট্য নিয়ে ওই তরুণীর সামনে হাজির হন অভিযুক্ত যুবক। বলেন, কুণ্ডলীগত কিছু সমস্যা রয়েছে দু’জনের। তাই কোনও ভাবেই এই বিয়ে তিনি করতে পারবেন না। এরপরই ওই তরুণী অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।
বোম্বে হাইকোর্টে সেই মামলা পৌঁছয়। শুরু হয় শুনানি। গত সোমবার বিচারপতি এস কে শিন্ডের সিঙ্গল বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। অভিযুক্ত যুবক আবেদন করেছিলেন, প্রতারণা ও ধর্ষণের মামলা থেকে তাঁকে খালাস করা হোক। অভিযুক্ত যুবকের আইনজীবী রাজা ঠাকরের বক্তব্য ছিল, তাঁর মক্কেল ও অভিযোগকারীর সম্পর্ক এগোতে পারেনি, কারণ তাঁদের ‘অ্যাস্ট্রোলজিক্যাল ইনকমপ্যাটিবিলিটি’ ছিল। এখানে প্রতারণা কিংবা ধর্ষণের কোনও জায়গাই নেই। বিচারপতি শিন্ডে রাজা ঠাকরের আবেদন খারিজ করে দেন।
আদালত জানিয়ে দেয়, জ্যোতিষ শাস্ত্র, কুণ্ডলীর গরমিলকে ঢাল করে ওই যুবক বিয়ের প্রতিশ্রুতি ভেঙেছেন। আদালতের পর্যবেক্ষণ, এটা একেবারে মিথ্যা প্রতিশ্রুতিরই ঘটনা। যেখানে বিয়ে করার কথা বললেও পরে তা করতে অভিযুক্ত অসম্মত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: Bangladesh Hilsa: বাংলার বাজার ভরছে পদ্মার ইলিশে, অবশেষে এল বাঙালির রসনা তৃপ্তির ক্ষণ