
নয়া দিল্লি: বিয়ে ভাঙলেই ওঠে খোরপোষের প্রশ্ন। স্বামীর কাছে বড়সড় খোরপোষ চাওয়ার কথা প্রায়ই শোনা যায়। তাই বলে খোরপোষে আস্ত বিএমডব্লু (BMW)! দাবি শুনে হতবাক শীর্ষ আদালত। মাত্র ১৮ মাসের বিয়ে অথচ সেটা ভাঙার পর বিলাসবহুল ফ্ল্যাট পর্যন্ত দাবি করে বসেছেন স্ত্রী। সেই মামলায় বিশেষ পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের।
এই মামলায় যে মহিলা খোরপোষ দাবি করেছেন, তাঁর এমবিএ ডিগ্রি রয়েছে, তিনি আইটি সংস্থায় কর্মরত। বিচ্ছেদের পর সেই মহিলার দাবি, তাঁকে ১২ কোটি টাকা খোরপোষ হিসেবে দিতে হবে, দিতে হবে একটি বিএমডব্লু গাড়ি, দিতে হবে একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট। খোরপোষের দাবির বহর শুনে এজলাসে অনেকেরই চোখ কপালে উঠে যায়।
প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই, বিচারপতি বিনোদ চন্দ্রন ও বিচারপতি এনভি আনজারিয়ার বেঞ্চে চলছিল শুনানি। মহিলার শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা উল্লেখ করে শীর্ষ আদালত বলে, নিজের জীবন চালানোর জন্য যথেষ্ট আয় করতে পারেন ওই মহিলা।
মহিলার উদ্দেশে ডিভিশন বেঞ্চ বলে, “আপনি আইটি প্রফেশনাল। এমবিএ করেছেন। বেঙ্গালুরু বা হায়দরাবাদের মতো শহরে আপনার মতো কর্মীর চাহিদা তুঙ্গে। আপনি কাজ করছেন না কেন?” মাসে এক কোটি টাকা খোরপোষ চাইছেন শুনে প্রধান বিচারপতিও অবাক। তিনি মহিলাকে প্রশ্ন করেন, কিছু না করে, বাড়িতে বসে বসে এভাবে বিলাসবহুল জীবন কাটানো কি ঠিক? কেন অর্থনৈতিক স্বাধীনতায় জোর দেওয়া হচ্ছে না? মহিলার বক্তব্য, তাঁর স্বামী যথেষ্ট ধনী। তিনি আরও জানান, তাঁর মানসিক অবস্থার কথা উল্লেখ করে ডিভোর্সের জন্য আবেদন করেছেন তাঁর স্বামীই।
শেষ পর্যন্ত শীর্ষ আদালত বলে, মহিলার কাছে দুটি বিকল্প রয়েছে। প্রথমত, ফ্ল্যাট নিতে হবে অথবা এককালীন ৪ কোটি টাকা নিতে হবে। মহিলাকে পরামর্শ দিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আপনি শিক্ষিত। আপনি নিজে রোজগার করে সম্মানের সঙ্গে বাঁচুন।”
এটাই প্রথমবার নয়, গত মার্চ মাসে দিল্লি হাইকোর্ট বল, একজন শিক্ষিত মহিলার বসে বসে খোরপোষের টাকায় খাওয়া উচিত নয়। বিশেষত পূর্বে কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে, এভাবে বাড়িতে বসে বসে টাকা নেওয়া উচিত নয় বলেও উল্লেখ করে আদালত।