বালেশ্বর: তুবড়ে যাওয়া ট্রেনের কামরা আর রেললাইনের স্লিপারগুলো যেন বরফির আকারে পড়ে রয়েছে। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ছিন্নভিন্ন কামরাগুলি ছিটকে পড়ে পাশের ডাউন লাইনে ও নয়ানজুলিতে। রেললাইনের ধারে ট্রেনের কামরা কাত হয়ে পড়ে রয়েছে। আর চতুর্দিকে দলা পাকিয়ে যাওয়া সারি সারি লাশ। রক্তাক্ত চতুর্দিক। অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের মাঝেই কানে ভেসে আসছে একাধিক ফোনের রিংটোন। মালিকরা সুস্থ না মৃত না আহত? তা কে জানে? কিন্তু ফোনগুলিকে তার মালিককে জানাতে চাইছে প্রিয়জনের বার্তা। ধ্বংসস্তূপের মাঝে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে একাধিক মোবাইল। সেগুলি এখনও জীবিত। বেজে চলেছে। কারোও মোবাইলে আবার ভেসে উঠছে প্রিয়জনের মুখও। কিন্তু সেগুলি কেউ ধরছেন না। ফোন বেজে বেজে কেটে যাচ্ছে। ফোনের এপ্রান্তে ‘কল এন্ডেড’ আর ওপরপ্রান্তের লোক নিশ্চিতভাবে শুনতে পারছেন, ‘যে নম্বরে আপনি কল করেছেন, তিনি এখন উত্তর দিচ্ছেন না।’
আমাদের প্রতিনিধি যখন দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রতিবেদন সরাসরি সম্প্রচারিত করছেন, তখনও পিছনে পড়া থাকা একটি মোবাইল বেজে চলছিল। কার উদ্দেশ্যে বার্তা, তা বোঝার উপায় নেই।
ওড়িশার বালেশ্বরে আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় নিহত এবং আহতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। কীভাবে দুর্ঘটনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। রেলের একটি সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, বালেশ্বরের বাহানগা বাজারের কাছে চেন্নাইগামী ২৩ কামরার করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়। ট্রেনটি সামনে থাকা একটি মালগাড়িকেও ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনার পর গোটা দৃশ্য ‘টপ ভিউ’ থেকে একটা বরফির আকার নিয়েছে।