Madhya Pradesh: অধরা লটারির স্বপ্ন! লক্ষ টাকার পিছনে ছুটতে গিয়ে চূড়ান্ত পরিণতি আশাকর্মীর

Madhya Pradesh: তবে এক সকালে আসা একটা ফোন কল ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে দিল পুষ্পলতার জীবন। বিদেশি নম্বর থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের কিছু ব্যক্তি ফোন করেছিল তাকে। জানিয়েছিল, সে নাকি দশ লক্ষ নগদ টাকা, সোনা, হিরে-সব মিলিয়ে একেবারে লটারি জিতে গিয়েছেন।

Madhya Pradesh: অধরা লটারির স্বপ্ন! লক্ষ টাকার পিছনে ছুটতে গিয়ে চূড়ান্ত পরিণতি আশাকর্মীর
প্রতীকী ছবিImage Credit source: Getty Image

|

Jun 21, 2025 | 4:10 PM

ভোপাল: খুদে থেকে বৃ্দ্ধ। গ্রামের প্রায় প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্যের খোঁজ রাখেন পুষ্পলতা। কিন্তু তার জীবনেই যে এমন চূড়ান্ত অন্ধকার নেমে আসবে, তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি তিনি। পুষ্পলতা ঝারিয়া মধ্য প্রদেশের জবলপুরের বার্গি গ্রামের বাসিন্দা। সেখানেই একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আশাকর্মী হিসাবে নিযুক্ত তিনি। সামান্য কিছু বেতন, তাই দিয়েই দিনগুজরান।

তবে এক সকালে আসা একটা ফোন কল ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে দিল পুষ্পলতার জীবন। বিদেশি নম্বর থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের কিছু ব্যক্তি ফোন করেছিলেন তাকে। জানিয়েছিলেন, সে নাকি দশ লক্ষ নগদ টাকা, সোনা, হিরে-সব মিলিয়ে একেবারে লটারি জিতে গিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই এরপরেই উচ্ছস্বিত হয়ে পড়েন পুষ্পলতা। ঠাওর করে উঠতে পারেন না যে নিজের ভুলেই সত্যি ও মিথ্যের ঘেরাটোপে ঢাকা পড়ছেন তিনি।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম NDTV-র একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্চ মাসে এই ভুয়ো লটারি জালিয়াতিতে পা দেন পুষ্পলতা। এরপর আগামী মাস দুয়েক ধরে চলে মানসিক ও আর্থিক শোষণ। প্রথমে একটি সামান্য টাকার প্রসেসিং ফি নিয়েছিল তারা। পরিমাণটা অল্প হওয়ায় ১০ লক্ষের আশায় তা দিয়েও দিয়েছিলেন তিনি।

এরপর নতুন ফন্দি আঁটে প্রতারকরা। লটারির টাকা দেওয়ার নাম করে আগেই ওই আশাকর্মীর থেকে যাবতীয় পরিচয় পত্র হাতিয়ে ছিলেন প্রতারকরা। তারপর শুরু হয় আসল খেলা। আশাকর্মীকে তারা জানায়, তার লটারির পুরস্কার নিয়ে আসার পথে গ্রেফতার হয়েছে সেই সংস্থার কর্মী। এমনকি, তার সঙ্গে যেহেতু ওই আশা কর্মীর আধার কার্ড রয়েছে, সেও গ্রেফতার হয়ে যেতে পারে বলে পুষ্পলতাকে ভয় দেখাতে শুরু করেন প্রতারকরা। আর ভয় দেখিয়েই তারা হাতিয়ে নেয় প্রায় ৪ লক্ষ টাকা।

সামান্য আশা কর্মীর কাজ করে দিন চালান পুষ্পলতা। ৪ লক্ষের মতো বড় অঙ্কের টাকা তার কাছে ছিল না। কিন্তু ভয়ে প্রাণ বাঁচাতে আত্মীয়দের থেকে ধার করে বসেন তিনি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিক্ষা পর্যন্ত চান।

এই সময়কালেই আবার নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন পুষ্পলতা, এমনটাই দাবি পরিবারের। কিন্তু কেন বা কীভাবে নিখোঁজ হন তিনি? পরিবার তরফে জানা গিয়েছে, এক আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়ার নাম করে সে বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছিল। আত্মীয়ের বাড়িও পৌঁছেছিল, কিন্তু সেখান থেকে আর বাড়ি ফেরেনি। সে কোনও ভাবে প্রতারকদের ঠিকানা জোগাড় করে পৌঁছে যায় তাদের ডেরায়। দাবি করে দশ লক্ষ টাকার। করে কান্নাকাটি। যেটা ভিডিয়ো করে রাখে ওই প্রতারকরা।

পরবর্তীতে ওই ভিডিয়োর লাভ তুলতে প্রতারকরা আশা কর্মীর স্বামীকেও হুমকি-হুঁশিয়ারি দেয়। দাবি করে, তারা পুষ্পলতাকে অপহরণ করেছে। সেই ভিত্তিতে ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিলেই রেহাই পাবে সে।

পরিস্থিতি যে হাতের বাইরে চলে গিয়েছে, তা প্রথম বুঝতে পারেন পুষ্পলতার মেয়ে। প্রথমে থানায় গিয়ে অভিযোগ। তারপর হাইকোর্টে দ্বারস্থ হয় তারা। আদালতের নির্দেশে গঠন হয় চার সদস্য়ের তদন্তকারীদের দল। দিল্লি থেকে উদ্ধার করা হয় পুষ্পলতাকে। গ্রেফতার হয় প্রতারকরা। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এই গোটা ঘটনা মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন ওই আশা কর্মী।