
গান্ধীনগর: অচেনা নম্বর থেকে একটা ফোন এসেছিল। আর সেই ফোন আসার চার মাসের মধ্যে নিঃস্ব হয়ে গেলেন এক প্রবীণ মহিলা চিকিৎসক। যখন তিনি বুঝলেন যে প্রতারিত হয়েছেন, ততদিনে খুইয়েছেন ১৯ কোটি টাকা। ঘটনাটি গুজরাটের গান্ধীনগরের। অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নেমে সুরাট থেকে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
ওই প্রবীণ মহিলা চিকিৎসকের সঙ্গে কী ঘটেছিল?
পুলিশ জানিয়েছে, গান্ধীনগরের ওই প্রবীণ মহিলা চিকিৎসকের কাছে গত ১৫ মার্চ একটি ফোন এসেছিল। নিজেকে অফিসার পরিচয় দিয়ে ওই ব্যক্তি বলেন, মহিলা চিকিৎসকের ফোনে আপত্তিজনক বিষয়বস্তু রয়েছে। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ মামলা দায়েরের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এরপর থেকে একাধিক ফোন আসে ওই মহিলা চিকিৎসকের মোবাইলে। কেউ নিজেকে সাব ইনস্পেক্টর বলে পরিচয় দেন। কেউ নিজেকে সরকারি আইনজীবী বলে পরিচয় দেন। তাঁকে ডিজিটাল অ্যারেস্ট করা হয়েছে বলে জানানো হয়। এতে ভয় পেয়ে যান ওই প্রবীণ চিকিৎসক।
এরপর ধাপে ধাপে ১৯ কোটি টাকা ওই চিকিৎসক প্রতারকদের দেওয়া ৩৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরে ট্রান্সফার করেন। এমনকি, মহিলাকে তাঁর সোনার গয়না জমা রেখে ঋণ নিতেও বাধ্য করে প্রতারকরা। সেই টাকাও হাতিয়ে নেয় তারা। ওই চিকিৎসক এতটাই ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন যে বাড়ি থেকে কোথাও গেলে ভিডিয়ো কল করে প্রতারকদের জানাতেন।
একসময় প্রতারকদের ফোন আসা বন্ধ হয়। তখন ওই মহিলা তাঁর আত্মীয়দের বিষয়টি জানান। ততক্ষণে অবশ্য নিঃস্ব হয়ে গিয়েছেন তিনি। গত ১৬ জুলাই গুজরাটের সিআইডি ক্রাইমের সাইবার সেলে তিনি অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার তদন্তে নেমে সুরাট থেকে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অন্য অভিযুক্তদের খোঁজ পেতে চাইছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, ডিজিটাল গ্রেফতারির মাধ্যমে এক ব্যক্তির কাছ থেকে এত কোটি টাকা প্রতারণা কথা সাধারণত শোনা যায়নি। এদিকে, জীবনের সব সঞ্চয় খুইয়ে এখন পুলিশের দিকে তাকিয়ে ওই প্রবীণ চিকিৎসক।