
মুম্বই: বই পড়া থেকে হাঁটা-চলা, আমাদের নিত্য জীবনের স্বাভাবিক কাজগুলোও, তাঁর কাছে এখন অস্বাভাবিক। না পারে হাঁটতে, না পারে পড়তে। সব কিছু ৩১ বছর বয়সে এসে নতুন করে শিখতে হচ্ছে মুম্বইয়ের পদ্মজাকে।
পেশায় তিনি একজন চলচ্চিত্র-নির্মাতা। মাঝে মধ্যে কাজ করেন ফটোগ্রাফার হিসাবেও। তবে নিজের এই দক্ষতাগুলো কিন্তু এককালে হারিয়ে ফেলেছিলেন পদ্মজা। সব কিছু শিখতে হয়েছে আবার নতুন করে। কিন্তু এই মধ্যবয়সে এসে কী এমন ঘটল পদ্মজার সঙ্গে?
জানা গিয়েছে, ছয় মাসে পাঁচ বার মস্তিষ্কে অস্ত্রপচার হয়েছে পদ্মজার। যার জেরে এই হাল তাঁর। ভুলে গিয়েছেন নিত্য জীবনের সাধারণ কাজ-কর্মগুলোও। ভুলেছেন চলা-ফেরা, বই পড়া, নিজের হাতে খাওয়া-দাওয়াও। তবে সব ভুলেও কিন্তু এখনও হেরে যাননি পদ্মজা। জারি রেখেছেন নিজের লড়াই। নতুন করে ‘বাঁচতে’ শুরু করেছেন নিজের জীবন। শিখতে শুরু করেছেন ছোটবেলায় শেখা জিনিসগুলো।
পদ্মজার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঝে মধ্যেই মাথায় খুব ব্যথা হত তাঁর। তা এতটাই অসহ্যকর যে ব্যথার মোচড়ে নিজেকে ‘আঘাত’ করতেও পিছপা হতেন না পদ্মজা। এমনকি, এই মাথা ব্যথা নিয়ে একাধিক চিকিৎসকের কাছে দ্বারস্থ হলেও কোনও কূল কিনারা খুঁজে পান না তিনি।
এরপর ২০১৭ সালে নানা পরীক্ষা-নিরিক্ষার পর অবশেষে ধরা পড়ে পদ্মজার মাথা ব্যথার আসল কারণ। জানা যায়, পদ্মজার মস্তিষ্কের দানা বেঁধেছে এক বিরল সংক্রমণ। ফোঁড়ার মতো আকার নিয়েছে সেটি। প্রথমদিকে যা পরিষ্কার করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। সেই নির্দেশ মতোই প্রথমবার অস্ত্রপচার করান পদ্মজা। কিন্তু তারপরেও সাড়ে না রোগ। ৪০ দিনের মধ্যে চলে মোট চারবার অস্ত্রপচার করতে হয় তাঁকে। তারপর কিছুটা বিরতি। চার মাস পর শেষ অস্ত্রপচারের মধ্য়ে দিয়ে নতুন জীবন পান পদ্মজা।
কিন্তু ছয় মাসে মস্তিষ্কে পাঁচবার অস্ত্রপচারের জেরে, নিজের স্বাভাবিক ক্ষমতাগুলোও হারিয়ে ফেলেন পদ্মজা। নতুন করে তাঁকে আবার শিখতে হয় হাঁটা-চলা, ছোটবেলার মতোই আবার A, B, C, D পড়া শুরু করেন তিনি। এখন আবার নিজের আগের জীবন ফিরে পেয়েছেন পদ্মজা। একটা সিনেমাও বানাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।