
পূর্ণিয়া: নৃশংস। ডাইনি অপবাদ দিয়ে এক পরিবারের পাঁচজনকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগ। ঘটনাটি বিহারের পূর্ণিয়ার। মৃতদের মধ্যে ৩ জন মহিলা এবং ২ জন পুরুষ। পুড়ে যাওয়া দেহগুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার নিন্দা করে নীতীশ কুমারের সরকারকে তোপ দেগেছেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব।
সদর পূর্ণিয়ার এসডিপিও পঙ্কজ কুমার শর্মা বলেন, “বছর ষোলোর এক কিশোর পুলিশকে ফোন করে জানায়, রবিবার রাতে তাদের পরিবারের সদস্যদের মারধর করে ৫ জনকে জ্যান্ত পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।” মৃতদের নাম বাবুলাল ওরাওঁ (৫০), সীতা দেবী (৪৮) , মনজিৎ ওরাওঁ (২৫), রানি দেবী (২৩) এবং কাতো দেবী (৬৫)।
পুলিশ জানিয়েছে, পূর্ণিয়ার মুফাসিল থানা এলাকার তেতগামা গ্রামে রামদেব ওরাওঁ নামে এক ব্যক্তির সন্তান অসুস্থ ছিল। ৩ দিন আগে ঝাড়ফুঁক করা হয়। সেইসময় মৃত্যু হয় তার। গ্রামের লোকের সন্দেহ হয়, কালো জাদুর জন্য রামদেবের সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। বাবুলাল ওরাওঁয়ের পরিবারকে ডাইনি অপবাদ দেয় গ্রামবাসীরা। তারপরই রবিবার রাতে হামলা চালানো হয়।
ছুটে পালিয়ে প্রাণ বাঁচায় ওই পরিবারের বছর ষোলোর কিশোর সোনু কুমার। সে জানায়, গ্রামের লোকেরা সন্দেহ করছিল, তার দিদিমা কাতো দেবী কালো জাদু করেন। এই অপবাদ দিয়ে রবিবার রাতে গ্রামের মোড়ল নকুল ওরাওঁয়ের নেতৃত্বে বৈঠক হয়। সেখানে প্রায় ২০০ জন উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে কাতো দেবীর পরিবারকেও ডাকা হয়। সেখানে কাতো দেবীর কোনও বক্তব্যই মানা হয়নি। সোনু বলে, প্রথমে লাঠি-সোঁটা দিয়ে মারধর করা হয়। এরপর পরিবারের পাঁচজনের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। জ্যান্ত পুড়ে মৃত্যু হয় পাঁচজনের। কোনওরকমে ছুটে পালিয়ে প্রাণ বাঁচায় সোনু। সে-ই ঘটনার কথা পুলিশকে জানায়।
ঘটনার পর থেকে এলাকা থমথমে। বেশিরভাগ বাসিন্দা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। তিনজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এদিকে, নীতীশ কুমারের সরকারকে তোপ দেগে তেজস্বী যাদব বলেন, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। একের পর এক গণহত্যার ঘটনা ঘটছে।