
নয়াদিল্লি: নামের শুরুতে ‘শীর্ষ’ রয়েছে, তাই আপামর জনগণের কাছে সুপ্রিম কোর্ট মানে সর্বোচ্চ বিচারের দুয়ার। তারা শীর্ষ, তাদের বিচারপতিরাও উচ্চ পদমর্যাদার। কিন্তু তাদের থেকে হাইকোর্টের বিচারপতি ঘুণাক্ষরেও কম নয়। তাদের সাংবিধানিক পদমর্যাদা একেবারে সমান।
সোমবার একটি মামলার শুনানি চলাকালীন ঠিক এমনই পর্যবেক্ষণ শোনা গেল প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে। এদিন তেলেঙ্গানা হাইকোর্টের এক বিচারপতির বদলির আবেদন মামলার শুনানি চলছিল প্রধান বিচারপতি বিআর গভাই নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে। সেই শুনানি চলাকালীন আদালতের পর্যবেক্ষণ, হাইকোর্টের বিচারপতিরাও সাংবিধানিক দায়িত্বপ্রাপ্ত। ঠিক সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মতো তারা সমান ক্ষমতাসম্পন্ন। সাংবিধানিক পরিকাঠামোয় তারা কোনও ভাবেই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের থেকে কম নয়।
আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, যদিও সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের দেওয়া কোনও রায়কে খারিজ, স্থগিত বা বহাল রাখতে পারে। কিন্তু এর মানে এটা নয় যে হাইকোর্টের বিচারপতিদের উপর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
এদিন শুনানি চলাকালীন মামলাকারী আইনজীবীদের দিকে ভর্ৎসনার সুরে দেশের প্রধান বিচারপতি বলেন, “বেশির ভাগ আইনজীবীর মধ্য়ে হাইকোর্ট বা ট্রায়াল কোর্টের বিচারপতি বা বিচারকদের ছোট করার একটা ট্রেন্ড তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে যদি কোনও মামলার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক নেতা জড়িয়ে থাকেন, তা হলে তো ধরেই নেওয়া হয় মামলাকারী বিচার পাবেন না।”
কিন্তু হঠাৎ করেই বিচারপতি-বৈষম্যতা প্রসঙ্গে তপ্ত হল সুপ্রিম কোর্ট? ঘটনার সূত্রপাত ২৯ জুলাই। এক অভিযুক্ত আইনজীবীর বিরুদ্ধে পিটিশন দায়ের সুপ্রিম কোর্টে। এই ব্যক্তি তেলেঙ্গনা হাইকোর্টের এক বিচারপতির বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগ তোলেন। কারণ সেই বিচারপতি সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিরুদ্ধে হওয়া একটি ফৌজদারি মামলার খারিজ করে দিয়েছিলেন। এরপর সেই মামলার সঙ্গে জুড়ে যায় ওই বিচারপতি বদলির পিটিশন।ব একজন বিচারপতির বিরুদ্ধে কীভাবে এমন মন্তব্য করা যায়? এদিনের শুনানিতে সেই প্রশ্নই তোলে আদালত। পাশাপাশি, অভিযুক্ত-সহ বেশ কিছু আইনজীবীকে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।