
নয়াদিল্লি: উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পদপ্রার্থী হিসাবে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বি সুদর্শন রেড্ডির নাম ঘোষণা করল বিরোধী জোট ইন্ডিয়া ব্লক। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই নাম ঘোষণা করেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। প্রথম থেকেই ইন্ডি জোটের পদপ্রার্থী নিয়ে একাধিক নাম ভেসে বেড়াচ্ছিল রাজনৈতিক মহলে। বিশেষ করে শাসকজোট এনডিএ তামিলনাড়ু থেকে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণার পরই বিরোধী জোট ইন্ডিয়া ব্লকের অন্দরে তৈরি হয়েছিল একাধিক সমীকরণ।
কখনও উঠে এসেছে ইসরোর প্রাক্তন বিজ্ঞানী তথা পদ্মশ্রী স্মারক সম্মানিত এম আন্নাদুরাইয়ের নাম। কখনও আবার উঠে এসেছে মহাত্মা গান্ধীর প্রপৌত্র তুষার গান্ধীর নাম। তবে অবশেষে সব জল্পনাকে দূরে সরিয়ে দক্ষিণী ‘অরাজনৈতিক’ মুখ বি সুদর্শন রেড্ডিতেই ‘আস্থা’ ইন্ডি জোটের। যেমনটা জোটের কাছে দাবি জানিয়েছিল তৃণমূল।
কে এই বি সুদর্শন রেড্ডি?
তিনি অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা। ১৯৪৬ সালে ওই রাজ্য়ের রাঙ্গা রেড্ডি জেলার একটি প্রান্তিক গ্রামে জন্ম হয় তাঁর। কৃষক পরিবারের সন্তান। পরবর্তীতে হায়দরাবাদে আইন নিয়ে পড়াশোনা। স্বাভাবিক ভাবেই কর্মজীবন শুরু হয় আইনজীবী হিসাবে। ১৯৮৮ সালে সরকারি আইনজীবী হিসাবে অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্ট নিযুক্ত করা হয় তাঁকে। ১৯৯৩ সালে পান বিচারপতির পদ। এরপর ২০০৫ সালে গুয়াহাটি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন বি সুদর্শন রেড্ডি। ২০০৭ সালে সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি। অবশেষে ২০১১ সালে অবসর গ্রহণ। এরপর ২০১৩ সালে গোয়ার প্রথম লোকায়ুক্ত হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। মার্চে দায়িত্বগ্রহণ, অক্টোবরেই ইস্তফা দিয়ে দেন বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী।
কোন সমীকরণে বি সুদর্শনের নাম নিশ্চিত করল ‘ইন্ডিয়া’?
ইন্ডিয়া জোটের উপরাষ্ট্রপতি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মোট দু”টি সমীকরণ তৈরি হয়েছিল। এক তৃণমূল অনড় থেকেছিল অরাজনৈতিক প্রার্থী বাছাইয়ে। অন্যদিকে, ডিএমকে অনড় থেকেছিল তামিলনাড়ু থেকে কোনও প্রার্থী বাছাইয়ের দাবিতে। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, বিরোধী জোট উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ‘তৃণমূলী ভাবনা’তেই বেশি জোর দিয়েছে। তবে ডিএমকে-র দাবিকে একেবারে যে সরিয়ে দিয়েছে এমনটা নয়। দক্ষিণী প্রার্থী কার্যত সেই সূত্র ধরেই। কিন্তু অন্ধ্রের বাসিন্দা কেন? যেখানে বিজেপি প্রার্থী দিল তামিলনাড়ু থেকে। তার বিপরীতে অন্ধ্রকে কেন হাতিয়ার করল ‘ইন্ডিয়া’?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা বি সুদর্শন রেড্ডিকে প্রার্থী করে চন্দ্রবাবু নায়ডুকে প্যাঁচে ফেলার চেষ্টা বিরোধীদের। অন্ধ্রের বাসিন্দাকে সমর্থন না করলে স্থানীয় আবেগে আঘাত লাগতে পারে বলে ধারণা।