
নয়াদিল্লি: ১১ জুলাই বিশ্বজুড়়ে পালিত হয় আন্তর্জাতিক জনসংখ্যা দিবস। আর এই দিনের বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের কথা কি আলোচনা থেকে বাদ যেতে পারে? মোটেই নয়। পশ্চিমী দুনিয়ার কাছে জনসংখ্যা ‘লাল-সংকেত’ হলেও ব্যাপারটা কিন্তু মোটেই তেমন নয়। এই জনসংখ্যাই এখন গোটা বিশ্বের ‘মস্তিষ্কে’ পরিণত হয়েছে।
এক দিকে যেমন উন্নত দেশগুলিতে হারিয়ে যাচ্ছে যুব প্রজন্ম, সেই সময় তাদের ‘আস্থার’ জায়গা হিসাবে উঠে আসছে ভারতীয়রাই। বর্তমানে ভারতের জনসংখ্যা সম্পর্কিত তথ্য পুরোপুরিই ভাসমান। যথাযথ তথ্য নেই। কারণ জনগণনা হয়ে ওঠেনি সেই ২০১১ সাল থেকে। প্রতি দশ বছরের ব্যবধানের হিসাবে একুশে গণনার কাজ হওয়ার কথা হলেও করোনা কারণে তা হয়ে ওঠেনি। তারপর করোনা মিটলে লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস, মহিলা আসন সংরক্ষণ-সহ একাধিক আইন প্রণয়নের জন্য তা আবার পিছিয়ে যায়।
অবশেষে সিদ্ধান্ত হয় ২০২৭ সালের মধ্যে জনগণনা পেশ করবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তবে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে সমীক্ষার কাজ। মোট দু’টি পর্যায়ে চলছে এই কাজ।
যেখানে প্রথম পর্যায়ে, দেশের প্রতিটি পরিবার ভিত্তিক তথ্য জোগাড় করবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আওতাধীন রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং জনশুমারি কমিশন। দেশজুড়ে থাকা প্রতিটি পরিবারের আয়, তাদের মোট সম্পদ, আর্থিক অবস্থার তথ্য জোগাড় করবে এই দফতর। এরপর সেই ভিত্তিতে তৈরি হবে দেশের প্রথম ডিডিটাল আদমশুমারির তথ্য।
দ্বিতীয় পর্যায়ে ভৌগলিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সংস্কৃতি ও অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে এই দেশের প্রতিটি মানুষের তথ্য জোগাড় করবে কেন্দ্র। আর জনগণনার এই পর্যায়ে সঙ্গী হবে জাতি প্রসঙ্গও। দেশের এই প্রথম কোনও জনগণনায় জুড়ে যাচ্ছে জাত প্রসঙ্গে। দেশে জাত ভিত্তিক সংরক্ষণ তৈরি হলেও এই নিয়ে কোনও সমীক্ষা হয়নি। কোন জাতির মানুষ, মোট জনসংখ্যার কত শতাংশ, তা জানে না কেন্দ্র। যা এবার জানবে তারা।
সবশেষে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে আধুনিক জনগণনার পাশাপাশি বলে রাখা প্রয়োজন প্রাচীন ভারতের জনগণনার কথাও। যার উল্লেখ রয়েছে চাণক্যের অর্থশাস্ত্রেও। সেই বৈদিক সময়েও কীভাবে হত সমীক্ষা, উল্লেখ রয়েছে ওই কথাটাও। তবে আধুনিক ভারতের প্রথম জনগণনা হয়েছিল ১৮৬৫ থেকে ৭২ সাল নাগাদ। তারপর থেকেই চলছে এই কাজ।