নয়া দিল্লি: করোনা (COVID19) কাবু করেছে গোটা দেশকে। তবু ভাঙতে পারেনি কৃষকদের মনোবল। তিনটি কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের (farm Laws) বিরুদ্ধে এখনও সরব তাঁরা। তিকরি সীমান্তে তাঁবু ছেড়ে ঘর বানিয়েও থাকতে শুরু করেছেন অনেকে। কিন্তু সেই সঙ্ঘবদ্ধ আন্দোলনে বাধ সেধেছে করোনা। এ বার কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন বঙ্গতনয়া মমিতা। শোকের ছায়া তিকরিতে।
হরিয়ানা সরকার সূত্র অনুসারে, মৃত পঁচিশ বছরের মমিতা বঙ্গের বাসিন্দা। কৃষকদের পক্ষে দীর্ঘ কয়েকমাস যাবৎ তিনি আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। বাংলা বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী মঞ্চে প্রতিবাদী কৃষকদের পাশেও দেখা গিয়েছিল মমিতাকে। জানা গিয়েছে, গত ২৬ এপ্রিল মমিতা জ্বরে আক্রান্ত হন। তারপর বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরলেও ভর্তি হতে পারেননি মমিতা। এরপরেই তাঁর কোভিড পরীক্ষা করানো হয়। কোভিড (COVID19) রিপোর্ট পজিটিভ আসতেই পিজিআইএস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানেও, ভর্তি হতে না পেরে অবশেষে তাঁকে বহদূর্গের শিবম হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি। মমিতার অবস্থার ক্রমশ অবনতি হয়। বৃহস্পতিবার সকালে মারা যান লড়াকু বঙ্গতনয়া।
প্রসঙ্গত, গত নভেম্বর মাস থেকে দিল্লির সিংঘু(Singhu), তিকরি(Tikri) ও গাজিপুর (Gazipur) সীমান্তে আন্দোলন করছেন কৃষকরা। তিনটি কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে সরব তাঁরা। মূলত, পঞ্জাব, হরিয়ানা উত্তর প্রদেশের কৃষকরা এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। বিগত কয়েক মাসে কৃষকদের সঙ্গে কেন্দ্র ১১ দফা বৈঠক করলেও কোনও সুরাহা মেলেনি। সরকারের তরফে আগামী এক থেকে দেড় বছরের জন্য আইন স্থগিত রাখার প্রস্তাব দেওয়া হলেও আন্দোলনকারী কৃষকরা আইন প্রত্যাহারের দাবিতেই অনড় থেকেছেন। করোনা আবহেও তাঁরা জারি রেখেছেন আন্দোলন।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লক্ষ ১২ হাজার ২৬২ জন। একদিনেই মৃত্যু হয়েছে ৩৯৮০ জনের। এটিই এখনও অবধি দেশে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখনও অবধি দেশে মোট ২ কোটি ১০ লক্ষ ৭৭ হাজার ৪১০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এরমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ কোটি ৭২ লক্ষ ৮০ হাজার ৮৪৪ জন। বর্তমানে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩৫ লক্ষ ৬৬ হাজার ৩৯৮।