
নয়াদিল্লি: ঘন্টাখানেকের বৈঠক, তারপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি দুই রাষ্ট্রপ্রধান। একদিকে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্য দিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই দুইয়ের জুটি আজকের নয়, দশক পুরনো। ঠিক যেমন, ভারত রাশিয়ার সম্পর্কটা দশক পুরনো। ভারতে গড়ে ২৮ ঘণ্টা মতো থাকলেন পুতিন। কিন্তু এই ২৮ ঘণ্টায় কতটা সমীকরণ বদলাল? কী কী চুক্তি বা স্বাক্ষর হল?
২০৩০ সাল পর্যন্ত বাণিজ্যিক রূপরেখা তৈরি করে ফেলেছে ভারত এবং রাশিয়া। শুক্রবার যৌথ সাংবাদিক বৈঠক শুরুর আগেই সেই বার্তা দিয়েছে নয়াদিল্লি। ২০৩০ সাল পর্যন্ত নিজেদের মধ্যে আর্থিক সমন্বয় বজায় রাখতে চলেছে দুই পক্ষ। এই সময়কালে ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে নয়াদিল্লি ও মস্কো।
যৌথ সাংবাদিক বৈঠক থেকে রুশ প্রেসিডেন্টের স্পষ্ট বার্তা, ‘ভারতকে বাধা বিপত্তি এড়িয়ে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে তেল পাঠাতে প্রস্তুত রাশিয়া।’ এবার সেই মর্মের হল সমঝোতা। একযোগে দুই দেশের জ্বালানি, বিদুৎ, পারমাণবিক ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে দুই দেশ।
পুতিনের ভারত সফরের মধ্যে তৈরি হল ইন্টারন্যাশনাল নর্থ সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডোরের রূপরেখা। এবার সমুদ্র পথেই জুড়ে যাবে ভারতের চেন্নাই এবং রাশিয়ার ভ্লাদিভোস্টক।
পারমাণবিক শক্তিতে জোর দিয়েছে ভারত এবং রাশিয়া। তৈরি হয়েছে সমন্বয়। শুক্রবার তামিলনাড়ুর অন্যতম পারমাণবিক কেন্দ্রকে সম্পূর্ণ ভাবে তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। এছাড়াও, আগামী দিনে মহাকাশ অভিযান ও গবেষণার ক্ষেত্রে ইসরো এবং রসকোসমস এক সঙ্গে কাজ করতে চলেছে বলেই জানিয়েছেন আধিকারিকরা।
যৌথ সাংবাদিক বৈঠক থেকে মোদী বলেছিলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালাচ্ছে ভারত-রাশিয়া। পহেলগাম হোক বা ক্রোকাস সিটি হল, এই সমস্ত ঘটনার উৎস একটাই।’ এদিনের বৈঠকে একযোগে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হয়েছে দুই দেশ।
সামরিক খাতে যৌথ ভাবে গবেষণার পথ প্রশস্ত, মেক ইন ইন্ডিয়া সামরিক সরঞ্জামে জোর। পাশাপাশি, যৌথ সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য সমঝোতা পত্র স্বাক্ষর করেছে ভারত রাশিয়া। এছাড়াও, বিজ্ঞান গবেষণা, দুই দেশের মধ্যে পর্যটন বৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক মঞ্চে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে দুই দেশ।