নয়া দিল্লি: যুদ্ধবিমানের ঘাটতি মেটাতে বায়ুসেনার মেগা-প্ল্যান। শিলমোহর দিল কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। এই মেগাপ্ল্যানের চারটি পার্ট। প্রথমত, ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় ১২টি নতুন সুখোই এমকেআই যুদ্ধবিমান তৈরি হবে। এর জন্য হ্যালের (HAL) সঙ্গে চুক্তি করল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
নাসিকে হ্যাল-এর কারখানায় যুদ্ধবিমানগুলি তৈরি হবে। সুখোই যুদ্ধবিমান আদতে রাশিয়ার তৈরি। তবে নাসিকের কারখানা থেকে যে সুখোইগুলি বেরবে, সেগুলো সব অর্থেই ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ সুখোই। এই যুদ্ধবিমানের ৬২ শতাংশ যন্ত্রপাতি ভারতেই তৈরি হবে। অ্যাসেম্বিং-এর কাজও হবে বেঙ্গালুরু ও কোচিনে। দ্বিতীয়ত, সুপার সুখোই, ২০২৮ সালের মধ্যে ভারতে তৈরি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান। দুনিয়ার যে কোনও যুদ্ধবিমানের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো এক যুদ্ধবিমান। এমন এক যুদ্ধবিমান, যা রাফালকেও চ্যালেঞ্জ ছুড়তে পারে।
ভারতের হাতে থাকা ৮৪টি সুখোইকে ঢেলে সাজিয়ে সুপার সুখোই করে তোলার দায়িত্ব হ্যাল ও ডিআরডিও-র। সুপার সুখোইয়ে কী, কী থাকবে এতে? অত্যাধুনিক AESA রাডার, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার স্যুট ও এয়ার আর্মার। সঙ্গে ইজরায়েলে তৈরি স্পাইস শর্ট রেঞ্জ মিসাইল ও মিসার এয়ার ডিটেকশন সিস্টেমও থাকছে।
গত ১৬ অক্টোবর গাজায় হামাসের শীর্ষনেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করেছিল আইডিএফ। তাঁদের ছোড়া মিসাইল ঘরের মধ্যে চেয়ার বসে থাকা নেতার কপাল ফুটে করে দেয়। সেই অভিযানে স্পাইস ও মিসার এয়ার ডিটেকশন সিস্টেম ব্যবহার করেছিল আইডিএফ। তৃতীয়ত, রাফালের পর আরও এক রাফালের চুক্তিও চূড়ান্ত হওয়ার পথে। খোদ নৌসেনা প্রধান সেই ইঙ্গিত দিচ্ছেন। অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠীর দাবি, মেরিন রাফাল নিয়ে ভারত-ফ্রান্স সমঝোতা চূড়ান্ত। জানুয়ারিতেই হয়ত চুক্তি সই করবে ভারত।
বায়ুসেনার দুই বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিক্রান্ত ও আইএনএস বিক্রমাদিত্য থেকে অপারেশন চালাতে ২৬টি মেরিন রাফাল কিনছে ভারত। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাফালের পর মেরিন রাফাল হাতে আসার অর্থ, দুই মহাসাগরে নৌ-সেনার কভারিং ও পাল্টা হামলার ক্ষমতা একলাফে অনেকটা বাড়াবে। অন্যভাবে বললে, আকাশের মতো সাগরেও সুরক্ষিত হবে দেশ।
চতুর্থত, যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন তৈরিতেও ভারত-রাশিয়া যৌথ উদ্যোগের সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বল। আমি যতটা খবর পাচ্ছি, তাতে রুশ প্রেসিডেন্টের ভারত সফরের সময় যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন নিয়ে বড়সড় কোনও ঘোষণা হতে পারে। সুখোই-ব্রহ্মোস জুটি তৈরির কাজও এগিয়ে চলেছে। চলতি বছরের শুরুতে প্রতিরক্ষামন্ত্রক জানিয়েছিল, দেশের ১০০টি সুখোইকে সঙ্গে ব্রহ্মোস রেডি করে তোলা হবে। এই কাজের প্রথম কাজ ছিল মিসাইল ইন্ট্রিগ্রেশন সিস্টেম অ্যাকটিভেট করা। নভেম্বরের শুরুতেই সেই কাজ হয়েছে। এখনও বাকি আরও দুটো ধাপ।