নয়াদিল্লি: বিধুবিনোদ চোপড়ার ’12th Fail’ ইতিমধ্যেই দর্শকদের প্রচুর প্রশংসা কুড়িয়েছে। আইপিএস মনোজকুমার শর্মার জীবন নিয়ে এই ছবি ঠিকই, তবে এ ছবিকে আলাদা মাত্রা দিয়েছে প্রীতম পান্ডে চরিত্রটি। প্রীতমের হাত ধরেই মনোজের গোয়ালিয়র থেকে দিল্লি আসা, ইউপিএসসি নিয়ে স্বপ্ন দেখা এবং ১২ ক্লাস ফেল করা এক ছাত্রের আইপিএস অফিসার হওয়া।
সিনেমায় একটা খাবারের হোটেলে মনোজের সঙ্গে প্রীতমের প্রথম দেখা। মনোজ এসেছে গোয়ালিয়রে পিএসসি দিতে। এদিকে সেখানে এসে শোনে পরীক্ষা বাতিল। পেটে ছুঁচো ডন দিচ্ছে, এদিকে পকেট ফাঁকা। এরপরই একটি হোটেলে গিয়ে মনোজ মালিককে জানায়, তাঁকে বিনা অর্থে খেতে দিক। বদলে সে কায়িক শ্রম দিয়ে তা পুষিয়ে দেবে। তাতে সম্মতি দেয়নি হোটেল মালিক। বলেছিল, টাকা ছাড়াই খাবার খাক সে। কিন্তু মনোজ তাতে রাজি নয়।
সে সময় ওই হোটেলেই খেতে এসেছিল প্রীতম। সবটা শোনে সে। সে খাবারের টাকা দিতে চাইলে মনোজ নেয়নি। এরপরই কথায় কথায় মনোজকে সে ইউপিএসসির কথা জানায়। সেই প্রথমবার মনোজ শোনে ইউপিএসসির কথা। প্রথম জানে আইপিএস শব্দের অর্থ।
মনোজ শর্মা তো রক্তমাংসের মানুষকে ঘিরেই তৈরি। কিন্তু প্রীতম পান্ডের সঙ্গে বাস্তবের কারও যোগ রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রথম দিকে দর্শকদের ধোঁয়াশা থাকলেও, পর্দা উঠতে খুব বেশি সময় লাগেনি। যাঁর উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে বিধুবিনোদের এই ছবি, সেই অনুরাগ পাঠকের আধারেই তৈরি প্রীতম পান্ডে চরিত্রটি।
মনোজ আইপিএস হলেও অনুরাগ সাহিত্যের পাতায় নিজেকে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। তা করেও দেখিয়েছেন। হিন্দি সাহিত্যে তিনি প্রথিতযশা লেখক। বিধুবিনোদের মনোজ-প্রীতমের যে সখ্যতা, বাস্তব জীবনের মনোজ ও অনুরাগের বন্ধুত্বও কোনও অংশে কম নয়।
আইপিএস মনোজকুমার শর্মা এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে খোলাখুলিই অনুরাগ পাঠককে নিয়ে বলেন। মনোজ শর্মা বলেন, “অনুরাগ সেই বন্ধু আমার জীবনে যাঁর অবদান আমি কোনওদিনও ভুলতে পারব না। বন্ধুত্বের সংজ্ঞা ও।”
গোয়ালিওর থেকে দিল্লিতে আসার পর অনুরাগ কীভাবে মনোজের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, সেই কথা বলতে গিয়ে মনোজ শর্মা বলেন, “বাড়ি থেকে ও টাকা পয়সা নিয়েই এসেছিল। তবে আমার কাছে কিছুই ছিল না। আমার মনে আছে ও আমাকে ওর ওয়ালেটটাই দিয়ে দিয়েছিল। এমনকী ও চাউমিন কিনবে বলে আমার কাছে এসে ৮ টাকা চেয়েছিল। অথচ ওরই সব টাকা।”
বন্ধুত্ব শব্দটাই এতটা দামি, তার কোনও সংজ্ঞা হয় না, কোনও উপমা চলে না। বন্ধুত্ব চির সবুজ। লেখক অনুরাগ পাঠক ও আইপিএস মনোজকুমার শর্মার বন্ধুত্ব অঞ্জন দত্তের সেই গানের মতোই, ‘বন্ধুত্বের হয় না পদবি…, বন্ধুত্বের বয়স বাড়ে না।’