
গুয়াহাটি: টানা ১৬ দিন অনশন। তারপর অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। পশ্চিম কার্বি আংলং জেলা এবং সংলগ্ন কার্বিং আংলং জেলায় বহিরাগতদের উচ্ছেদ নিয়ে টানাপোড়েন দীর্ঘদিনের। জমি অধিকারের দাবিকে সামনে রেখে লড়াই চালাচ্ছে কার্বি জনগোষ্ঠী। আন্দোলন চলছে বহিরাগতদের উচ্ছেদ এবং ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত জনগোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষার দাবিতেও।
মঙ্গলবার অনশনরত কার্বি জনগোষ্ঠীর এক আন্দোলনকারীকে হাসপাতালে পাঠারনোর পর পরিস্থিতির অবনতি হয়। খবর ছড়ায়, কার্বি নেতাকে তুলে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। অবশ্য পুলিশের দাবি, সেই রকম কোনও গ্রেফতারি ঘটেইনি। স্থানীয় সূত্রের খবর, বিক্ষোভকারীরা এলাকার একটি সেতুর দখল নিতে চেয়েছিলেন। তাতে বাধা দেওয়া হলেই তেড়ে আসেন তাঁরা। পুলিশের উপর শুরু হয় হামলা। পাল্টা আন্দোলনকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করেন পুলিশ কর্মীরা। তারপরই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
পুলিশ বাহিনীকে লক্ষ্য় করে ইট, পাথর ছুড়তে থাকেন আন্দোলনকারীরা। তাতে জখম হন এক পুলিশ কর্মী। অসম পুলিশের ডিজিপি এবং আইজিপি (আইনশৃঙ্খলা) অখিলেশ সিং বলেন, ‘আমাদের উপর ককটেল ছোড়া হয়েছে, পাথর ছুড়ে আক্রমণ করা হয়েছে। এমনকি, তির ধনুক নিয়েও আক্রমণ চালানো হয়েছে।’ ইতিমধ্য়েই আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকা জুড়ে মোতায়েন হয়েছে র্যাফ। এদিন RAF-র ডেপুটি কমান্ডার টিএন সিং জানিয়েছেন, ‘খেরনি এবং সংলগ্ন এলাকায় ২০০ জনেরও বেশি নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে কিন্তু যে কোনও মুহূর্তেই আবার সংঘর্ষ হতে পারে।’ এছাড়াও মঙ্গলবার থেকেই কার্বি এলাকায় বন্ধ হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও।
কার্বিদের অভিযোগ, বহিরাগতেরা তাঁদের জমি দখল করে রেখে গিয়েছে। তাঁদের উচ্ছেদের কথা বার বার বলা হলেও কোনও পদক্ষেপ করেনি প্রশাসন। আগামী ২৬ ডিসেম্বর এই কার্বি আংলং স্বায়তশাসিত কাউন্সিলের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা ছিল সরকারের। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন রাজ্যের বন মন্ত্রী রনজ পেগু। কিন্তু তার আগেই উত্তাল পরিস্থিতি। এমনকি এই আবহে সোমবার কার্বি আংলং স্বায়ত্তশাসিত কাউন্সিলের প্রধানের বাসভবন-সহ খেরনি বাজারের প্রায় ১৫টি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। প্রাণ যায় দু’জনের। যাদের মধ্যে একজন আবার বাঙালি।