
ভোপাল: কেউ ভিডিয়ো তুলছেন, কেউ হতবাক চোখে তাকিয়ে দেখছেন। কেউ আবার দূরে দাঁড়িয়েই শিউরে উঠছেন। আর এদিকে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ছে মেয়েটার শরীর। গলার নলি চিরে ঢুকে যাচ্ছে তীক্ষ্ণ ছুরি। প্রকাশ্য়ে দিবালোকে ঘটা এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মধ্য প্রদেশে।
সে রাজ্যের নরসিংহপুর জেলা হাসপাতালে নার্সি পড়াশোনা করতেন নিহত সন্ধ্যা চৌধুরী। ঘটনার দিনটা অর্থাৎ সোমবারও প্রতিদিনের মতোই ছিল। নিজের প্রশিক্ষণ-পড়াশোনা নিয়ে হাসপাতালে ব্যস্ত ছিলেন সন্ধ্যা। শুধু প্রেমিকের সঙ্গে মনমালিন্য হওয়ার কারণে মনটা ঠিক ছিল না তার, দাবি সতীর্থদের।
আর এটা নাকি প্রতিদিনেরই হয়ে উঠেছিল তার কাছে। মধ্যপ্রদেশেরই বাসিন্দা অভিষেক কোষ্ঠীর সঙ্গে গত দু’বছর ধরে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল তার। তবে দু’জনের রসায়নটা যেন ঠিক জমত না। মাঝে মধ্য়েই ঝগড়া, অশান্তি লেগেই থাকত। কিন্তু তার পরিণতি এরকম?
ঘটনার দিনও রোজকার মতো ঝগড়া-ঝাঁটি হয়েছিল। কিন্তু সেই সব ভুলে নিজের মতো কাজে ব্যস্ত ছিলেন সন্ধ্যা। তখনই তার হাসপাতালে এসে হাজির হয় অভিষেক। সেই এমার্জেন্সি ওয়ার্ডে কিছু কাজ করেছিলেন সন্ধ্যা। অভিষেক এসেছে শুনে দেখা করতে যায়। তখনই ছুরি দিয়ে চলে আঘাত।
প্রেমিকের ছুরির আঘাতে নুইয়ে পড়ে সন্ধ্যা। লুটিয়ে পড়ে মাটিতে। থামে না অভিষেক। সন্ধ্যার গলায় বসিয়ে দেয় ছুরি। তারপর গলা কেটে হত্যা করে তাকে। গোটা ঘটনা চোখের সামনে হতে দেখে হাসপাতালের কর্মী ও চিকিৎসার জন্য আগত রোগীরা। কেউ কেউ ভিডিয়োও করেন।
এদিন নরসিংহপুর জেলার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ‘দু’জনেই একে অপরকে চিনত। সম্ভবত প্রেমের সম্পর্ক ছিল। অভিযুক্তের ছুরির আঘাতে ঘটনা স্থলেই মৃত্যু হয়েছে সেই নার্সিং পড়ুয়ার। মেয়েটির মৃত্যু নিশ্চিত করার পর সেখানেই ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যা করারও চেষ্টা করে সে। কিন্তু পারে না। উল্টে প্রাণের ভয়ে তৎক্ষণাৎই পালিয়ে যায়।’
পরবর্তীতে তদন্ত চালিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আপাতত হেফাজতে রয়েছে সে। সেই সময় প্রত্যক্ষদর্শীদের তোলা ভিডিয়োই আদালতের অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসাবে ব্যবহার করা হবে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে।