ভোপাল: অমিতাভ বচ্চন, জয়া ভাদুড়ির সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুসম্পর্ক সর্বজন বিদিত। মমতার আমন্ত্রণ অস্বীকার করার ক্ষমতা নেই, কলকাতায় চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনীতে এসে সে কথা নিজে বলে গিয়েছেন ‘বাংলার জামাই’। মমতাও ভরা মঞ্চে ‘অমিতজী’, ‘জয়াজী’ বলেই সম্বোধন করেন ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের এই দুই নক্ষত্রকে। এবার সেই বাঙালিয়ানাতেই নজর বিজেপির। বাংলা থেকে ঘুরে গিয়েই অমিতাভ বচ্চনের শাশুড়ির কাছে ছুটলেন বিজেপির হেভিওয়েট নেতা। লক্ষ্য জানানো, মমতার জমানায় কী ‘অবস্থা’ হয়েছে বাংলার।
বঙ্গ-মসনদ দখল নিতে চারদিক থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিজেপি। বাংলার প্রতিটা প্রান্তে প্রচার, নিত্য নতুন চমকদার জনসংযোগ কর্মসূচি তো করছেই। এবার রাজ্যের বাইরে থেকেও আধিপত্য প্রতিষ্ঠার প্রস্তুতি শুরু করে দিল গেরুয়া শিবির। বাংলার মন পেতে ভিন রাজ্যের বাঙালির দরজায় কড়া নাড়ছেন নেতারা। পশ্চিমবঙ্গে কেমন আছেন বাঙালিরা, সে কথাই শোনানো লক্ষ্য। ভোপালে সম্প্রতি অমিতাভ বচ্চনের শাশুড়ি তথা জয়া বচ্চনের মায়ের সঙ্গে দেখা করেন মধ্য প্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের জমানায় কেমন আছেন বঙ্গবাসী, জানিয়ে এসেছেন তা।
একুশের বিধানসভা ভোটে (Bengal Assembly Election 2021) বাংলার বেশ কয়েকটি বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব পড়েছে নরোত্তম মিশ্রর কাঁধে। দু’দিন আগে রাজ্যেও এসেছিলেন তিনি। পূর্ব বর্ধমান, বীরভূমে একাধিক দলীয় কর্মসূচি পালন করেন। এরপরই ভোপালে বাঙালিদের রমরমার দিকটি মাথায় রেখে জয়া বচ্চনের মা ইন্দিরা ভাদুড়ির সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
নরোত্তম মিশ্রর দাবি, “বাংলায় কোনও আইনকানুন ছাড়াই নির্মমতা দিদির সরকার চলছে। যেভাবে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র কনভয়ে হামলা হল তা শাসনহীন বাংলার ছবিটাই তুলে ধরছে।”
এরপরই মিশ্রর মন্তব্য, “ভোপাল-সহ মধ্য প্রদেশের বিস্তীর্ণ জায়গায় বহু বাঙালি বসবাস করেন। শরণার্থী সমস্যার কারণে অতীতে বহু বাঙালি এ রাজ্যেও এসেছেন। এমনকী কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে মধ্য প্রদেশ সরকার গাড়ির ব্যবস্থা করে অনেক পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলায়, নিজেদের ঘরে পাঠিয়েছে। আমি মধ্য প্রদেশের বাঙালিদের কাছে অনুরোধ করব তাঁরা যেন নির্মম ও দুর্নীতিবাজ দিদির সরকার থেকে বাংলায় বসবাসকারীদের বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান।”
২০২১ সালে বাংলাই পাখির চোখ বিজেপির। বহু কৌশলে ঘুঁটি সাজাচ্ছে তারা। রাজ্যে নিয়মিত যাতায়াত করছেন দলের শীর্ষ নেতারা। এমনকী তালিকায় রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর নামও। রাজনৈতিক মহলের দাবি, বাংলায় সেভাবে বিজেপি এখনও মুখ তৈরি করতে পারেনি। তাই সর্বভারতীয় শক্তিকে কাজে লাগাতে চায় তারা। কেন্দ্রীয় পাঁচ নেতাকে সে কারণে ত্রাণকর্তা করে ভোটের আগে বাংলায় এনেছে। কিন্তু শুধু বাংলায় থেকে বাংলা দখলের রণনীতিতে বিশ্বাস রাখছেন না মোদী-শাহরা। তাই বোধহয় এবার ভিন রাজ্যের বাঙালিতে নজর তাঁদের।