‘আমাদেরও বোকামি হয়েছে আসল সত্যটা বুঝতে পারিনি’, কিসান নিধিতে সায় মমতার
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কথা হয়েছে। এবং শীঘ্রই রাজ্যেও এই প্রকল্প শুরু হবে।
কলকাতা: আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির লাগাতার আক্রমণের মুখে বড় পদক্ষেপ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন নবান্নের সভাঘরে মমতা জানিয়ে দিলেন, এবার পশ্চিমবঙ্গেও চালু হতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান নিধি প্রকল্প (PM Kisan Yojana)। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। এবং শীঘ্রই রাজ্যেও এই প্রকল্প শুরু হবে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, “কিছুক্ষণ আগে আমার কৃষিমন্ত্রী সঙ্গে কথা হয়েছে। আমাদের টাকাটা পাঠিয়ে দিলে আমরাই কৃষকদের দিয়ে দিতাম। কিন্তু, কৃষিমন্ত্রী আমাদের বললেন, আমরা সরাসরি দেব।” সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের পোর্টালে এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য রাজ্যের ২১ লক্ষ কৃষক নাম নথিভুক্ত করিয়েছে। সেই তথ্য কেন্দ্র ভাগ করে নেবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে। রাজ্য তা ভেরিফাই করবে। তারপরই এই টাকা সরাসরি চাষিদের অ্যাকাউন্টে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সারা বছরে তিন দফায় চাষিদের অ্যাকাউন্টে ছয় হাজার টাকা করে দেয় কেন্দ্র।
তবে প্রকল্প চালু করার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী সম্মত হলেও কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। তিনি বলেন, “আমাকে বলছে তুমি ভেরিফিকেশনটা করে জানাচ্ছ না, তাই ওদের দিতে পারছি না। আমাদেরও বোকামি হয়েছে আমরা আসল সত্যটা বুঝতে পারিনি। পলিটিক্যালি করছে এটা। আমাদের পোর্টালে তো লেখায়নি, লিখিয়েছে তো তোমাদের পোর্টালে। এমনকি তোমরা আমার পোর্টালে লেখালেও তাকে দেবে না। কিন্তু আমি চাই কৃষকরা পাক। ওটা এক্সট্রা পাবে পাক। যাদের দু-একর জমি আছে পাবে।”
মুখ্যমন্ত্রী আজকের সিদ্ধান্তটির রাজনৈতিক মাহাত্ম অপরিসীম। কেননা, এর আগে কেন্দ্রের যেই মন্ত্রী এসে থাকুন না কেন, রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ যোজনা চালু না করা নিয়ে বেনজির আক্রমণ করেছেন তৃণমূল সু্প্রিমোকে। বিশেষ করে যে সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করছেন, তখন নিজের রাজ্যে কেন এই প্রকল্প চালু হতে দিচ্ছেন না। “এই প্রকল্প থেকে কাটমানি নেওয়ার সুযোগ নয় বলেই কি কৃষকদের বঞ্চিত থাকতে হচ্ছে?” এমন খোঁচাও প্রায়শই সহ্য করতে হয়েছে তাঁকে।
আরও পড়ুন: ‘দেশের সেবা’ করবেন সৌরভ, জল্পনা উস্কে মন্তব্য অনুরাগ ঠাকুরের
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এদিনের পর কেন্দ্রীয় নেতা-তথা মন্ত্রীদের একটা বড় আক্রমণের অস্ত্র ভোঁতা করে দিতে সক্ষম হলে তৃণমূল নেত্রী। কেননা, বিধানসভা ভোটের আগে এই ইস্যুতে শাহ-নাড্ডারা ইতিমধ্যেই তেড়েফুঁড়ে আক্রমণ চালিয়েছেন। যার প্রভাব আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনেও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল। তবে তার আগেই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের দুয়ার খুলে দিলেন মমতা।
আরও পড়ুন: শেষমেশ শোভন ছাড়াই শুরু হল বিজেপির পদযাত্রা, ‘মুখ’ সেই মুকুল-কৈলাস-অর্জুনরাই