পঞ্জাব: বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ছোটখাটো ঝগড়া-বিবাদ হয়েই থাকে। এক ছাদের তলায় দুজন মানুষ একসঙ্গে থাকতে শুরু করলে মতের অমিলও প্রকাশ্যে আসে কখনও কখনও। কিন্তু সেই ছোটখাটো সমস্যাতেও বিচ্ছেদের প্রশ্ন ওঠে কীভাবে! তাতেই অবাক আদালত। স্ত্রী চা করতে চান না বলে ডিভোর্স চেয়ে আদালতে গেলেন স্বামী। পঞ্জাব হরিয়ানা হাইকোর্টে পৌঁছয় সেই মামলা।
আবেদনকারী ব্যক্তি জানান, যখনই তাঁর কোনও আত্মীয় বা বন্ধুবান্ধব তাঁদের বাড়িতে যান, তখন তাঁর স্ত্রী তাঁদের আপ্যায়ন করেন না, চা খাওয়ানোর কথাও বলেন না। তাঁর দাবি, এই কারণে বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়দের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতি ঘটছে। তাঁর বাড়িতে কেউ আসছেন না। প্রথমে পারিবারিক আদালতে আবেদন করেন স্বামী। কিন্তু সেখানে কাজ না হওয়ায় তিনি পঞ্জাব হরিয়ানা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
হাইকোর্ট আবেদন শুনেই স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এত ছোটখাটো সমস্যার জন্য বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন মানতে পারবে না হাইকোর্ট। এদিকে, ওই ব্যক্তির স্ত্রী দাবি করেন, তাঁর স্বামী যে অভিযোগ করছেন তা ভুল। তিনি এমন কোনও কাজ করেন না। বরং স্বামীর মধ্যেই অনেক বদল এসেছে বলে দাবি করেন তিনি। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে নাকি ঝগড়াও করেন আজকাল। তারপরও তাঁর স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে যেতে চান না।
এদিকে, স্বামীর দাবি, স্ত্রী’র ব্যবহারে নাকি হতাশ হয়ে পড়ছেন তিনি, ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছেন। স্ত্রীর সঙ্গে একই ছাদের নীচে আর থাকতে পারবেন না বলেও জানান ওই ব্যক্তি। তাঁর বক্তব্য, স্ত্রী তাঁকে সম্মান করেন না, তাঁর আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবকেও নয়। সেই কারণে নাকি তাঁর ডিপ্রেশন দেখা দিচ্ছে, কোনও কাজ করতে ইচ্ছা করছে না তাঁর। কিন্তু স্বামীর এসব কোনও যুক্তিই হাইকোর্টে ধোপে টেকেনি। হাইকোর্ট স্পষ্ট বলেছে, এত ছোট ছোট বিষয়ে আমরা ডিভোর্সের নির্দেশ দিতে পারি না। আদালতের নির্দেশ শুনে মাথায় হাত পড়ে যায় স্বামীর।
পঞ্জাব হরিয়ানা হাইকোর্ট বলেছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ছোটখাটো বিবাদকে বিবাহবিচ্ছেদের কারণ হিসেবে ধরা যাবে না। হাইকোর্টের মতে, স্ত্রী যদি স্বামীর আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুদের জন্য চা তৈরি না করেন, তাহলে তাঁকে তো নৃশংসতা বলা যায় না। বেঞ্চ বলেছে যে এই ধরনের বিষয়গুলি বিবাহিত জীবনের অংশ, এর জন্য স্বামী এবং স্ত্রীকে প্রস্তুত থাকতে হবে।