নয়া দিল্লি: মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) হিসেব রক্ষক মণীশ কোঠারিকে (Manish Kothari)। বুধবার দিল্লির রাউজ় এভিনিউ কোর্টে তাঁকে পেশ করা হলে ৬ দিনের ইডি হেফাজতের (ED Custody) নির্দেশ দেন বিচারক। আর এরপরই কার্যত বিধ্বস্ত দেখাল মণীশকে। সংবাদ মাধ্যমের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি। ধরা ধরা গলায় বললেন, ‘আমি কিচ্ছু করিনি। আমি একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। এটাই আমার ভুল।’ তিনি কি কোনওভাবে কালো টাকা সাদা করানোর সঙ্গে যুক্ত? তাঁকে দিয়েই কি অনুব্রত মণ্ডল এসব কাজ করিয়েছেন? প্রশ্ন করা হলে মণীশ কান্না মেশানো গলায় বললেন, ‘না, আমি কিচ্ছু করিনি।’
উল্লেখ্য, অনুব্রত মণ্ডলের হিসেব রক্ষক মণীশ কোঠারি অনেকদিন ধরেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার স্ক্যানারে ছিলেন। গতকাল দিল্লিতে ইডির অফিসে ডেকে পাঠানো হয়েছিল মণীশকে। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে জিজ্ঞাসাবাদের পর্ব। প্রায় সাড়ে ৯ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদের পর মণীশ কোঠারিকে গ্রেফতার করেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা। এরপর এদিন মণীশকে দিল্লির রাউজ় এভিনিউ কোর্টে পেশ করে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, মণীশ সবকিছু জানে। সে অনুব্রতর হয়ে টাকা নিয়েছে বলেও আদালতে জানায় ইডি।
অন্যদিকে মণীশ কোঠারির আইনজীবী তাঁর মক্কেলের শারীরিক অসুস্থতার কথা জানান আদালতে। মণীশের যে সম্প্রতি অস্ত্রোপচার হয়েছে, সেই কথাও তুলে ধরা হয় বিচারকের কাছে। এমনকী অনুব্রতর হিসেব রক্ষক মণীশ যে তদন্তে সবরকমভাবে সাহায্য করছেন, এমন কথাও আদালতে জানান তাঁর আইনজীবী। তবে বিচারক শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর মণীশকে ৬ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। মণীশের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে ইডি হেফাজতে থাকাকালীন প্রতিদিন শারীরিক পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। প্রতিদিন ৩০ মিনিট শারীরিক পরীক্ষার জন্য রাখতে হবে বলে জানিয়েছেন বিচারক। আর এদিকে ইডি হেফাজতের নির্দেশের পরই কার্যত বিধ্বস্ত দেখাল মণীশকে। কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি।
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘চার্টার্ড অ্যাকাউন্টান্ট হওয়া একজনের কাছে গর্ব হওয়া উচিত। কিন্তু চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের পদ যদি বাটপারি ও লুঠের টাকা ম্যানেজ করার জন্য কেউ ব্যবহার করেন, তাহলে তিনি অপরাধী এবং তাঁকে কেঁদে ভাসাতে হবে।’