ভোপাল: বিজেপির ওপর বরাবরই মুসলিম বিরোধী তকমা রয়েছে। বিজেপি রাজে সংখ্যালঘুরা নিরাপদ নয়, এই অভিযোগ বারবার সরব হতে দেখা গিয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, মোদী জমানা শুরু হওয়ার পর থেকেই নানা ইস্যুকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ বেড়েছে। বিজেপি মুসলিম বিরোধী, বক্তব্যের মধ্যেই ভোপালে দেখা গেল এক ব্যতিক্রমী দৃশ্য!
সোমবার, ভোপালে নবনির্মিত বিশ্বমানের রাণী কমলাপতি রেলওয়ে স্টেশন উদ্বোধনের কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (PM Narendra Modi)। ভোপালে পৌঁছেই অনুষ্ঠানস্থলের দিকে রওনা দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর কনভয়। মাঝপথেই চোখে পড়ে, রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে রয়েছেন একদল মহিলা। হাতে জাতীয় পতাকা, মোদীর প্ল্যাকার্ড আর পরনে বোরখা। এই দৃশ্য দেখে রীতিমতো চমকে যান প্রধানমন্ত্রীর নিরপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা। তারা ভেবেছিলেন, মোদীকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ দেখানোর জন্যই হয়তো সমবেত হয়েছিলেন এই মুসলিম মহিলারা। পরে জানা যায় আদতে, প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ভোপালে স্বাগত জানানোর জন্যই সেখানে জড় হয়েছিলেন তারা। এই দৃশ্য বিজেপি তথা মোদী সরকারের কাছে যে যথেষ্ট ইতিবাচক, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। মহিলাদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে যেমন ছিল প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর বার্তা, একইসঙ্গে ‘তিন তালাক’ তুলে দেওয়ার জন্য নরেন্দ্র মোদীর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন।
২০১৯ সালের ভোটের আগেই নির্বাচনী প্রচারে প্রধানমন্ত্রীর স্লোগান ছিল, “সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস।” এই স্লোগানে দিয়েই তিনি বুঝিয়েছিলেন, মুসলিমরা তাঁর কাছে অচ্ছুৎ নয়, দেশের অভিভাবক হিসেবে তাদের বিশ্বাসও জিতে নিতে চান নরেন্দ্র মোদী।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শরিয়া আইন অনুযায়ী মুসলিম নারীদের অনেকটাই রক্ষণশীল জীবনযাপন করতে হয়। সেখানে একবিংশ শতকে সামাজিক ‘তিন তালাকের’ মত একটি সমাজের জন্য ক্ষতিকারক নিয়ম চালু ছিল। ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই, সংসদে আইন এনে তিন তালাককে বেআইনি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। মনে করা হয়েছিল এই সিদ্ধান্তে পরই মুসলিম মহিলাদের একটা বড় অংশের সমর্থন মোদী পাবেন । এদিন ভোলের এই ঘটনাটি প্রতিফলন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।