
শ্রীনগর: নতুন ছন্দে চলা কাশ্মীরের ফের একবার ছন্দ কেটে গেল জঙ্গিরা। উপত্যকাকে ভাসিয়ে দিয়ে গেল রক্তের বন্যায়। মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে হওয়া সন্ত্রাস হামলায় প্রাণ গিয়েছে ২৫ জন পর্যটক ও ১ জন কাশ্মীরি সহিসের। সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা এখনও ভুলতে পারেনি মৃতদের পরিবার। স্বর্গরাজ্যে বুলেটের রক্তের দাগটাও এখনও স্পষ্ট। সেই আবহেই মঙ্গলের ভয়াবহ ক্ষণগুলোর কথা নিজের সমাজমাধ্যমের ওয়ালে তুলে ধরেন মাইসুরের বাসিন্দা প্রসন্নকুমার ভাট।
স্বর্গরাজ্যে নিজের স্ত্রী, ভাই ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে গিয়েছিলেন প্রসন্ন। মঙ্গলবার ছিল তাদের পহেলগাঁও ভ্রমণ পর্ব। তার ভাই সেনার উচ্চপদস্থ কর্মী। তবে প্রসন্ন নিজে একজন তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা কর্মরত। সপরিবারের কাশ্মীর ভ্রমণ করতে গিয়ে যে এবার এমন নারকীয় ঘটনার সম্মুখীন হবেন তিনি, তা হয় তো স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি। নিজের পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমাদের ভ্রমণপর্ব দু’দিন স্থগিত হয়ে যায়। যার জেরে সেই অভিশপ্ত দিনটিতেই পহেলগাঁওয়ে পা রাখি আমরা।’
তাঁর সংযোজন, ‘তখন দুপুর দু’টো। পহেলগাঁওয়ের কর্দমাক্ত পথ পেরিয়ে প্রায় ২ কিলোমিটার চড়ে অবশেষে বৈসরনে পৌঁছেছি আমরা। পাশেই একটা ক্যাফে ছিল। সেখানেই প্রথমে গিয়ে বসি। তারপর হাঁটতে বেরোই। আচমকাই পরপর দু’টি গুলি শব্দ শুনতে পাই। সঙ্গে সঙ্গে সুন্দর মুহূর্তগুলো বিভিষীকায় পরিণত হয়ে যায়।’
নাশকতা যখন এক পা এক পা করে ছড়িয়ে পড়ছে, সেই আবহে প্রথম আন্দাজটা করে প্রসন্নর ভাই। বিপদের আঁচ পেতেই তড়িঘড়ি ৩৫-৪০ জন পর্যটককে বিপরীত দিকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় সে। প্রত্যেকেই নাকি মাথা নিচু করে দৌড়তে বলেন তিনি।
প্রসন্নের কথায়, ‘পালিয়ে প্রাণ বাঁচানো মোটেই সহজ ছিল না। কারণ মূল ফটকের সামনেই দাঁড়িয়ে ছিল আরও কয়েকজন জঙ্গি। তাদের দেখতেই আবার উল্টো দিকে রওনা দিতে হয় আমাদের। তারপর গিয়ে আশ্রয় নিয়ে ফেলি একটি পাহাড়ের কোণে। সেখানেই কিছুক্ষণ থাকার পর সেনা এসে আমাদের উদ্ধার করে।’