নয়া দিল্লি: বিভিন্ন নির্বাচনে কংগ্রেসের মুখ থুবড়ে পড়া ঘিরে দলের অন্দরেই এখন সমালোচনার জোয়ার। দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে দোষী ঠাওরাচ্ছেন নেতাদের একাংশ। এরইমধ্যে প্রকাশ্যে এল প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের অভিজ্ঞতা ভিত্তিক বই ‘দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল ইয়ার্স’-এর কিছু অংশ। যার জেরে নতুন করে বিতর্কে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। বইটিতে ২০১৪ সালে কংগ্রেসের হারের জন্য প্রণববাবু দায়ী করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে। একইসঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘কংগ্রেসের কিছু সদস্য’ বিশ্বাস করতেন প্রণববাবু যদি প্রধানমন্ত্রী হতেন তবে কংগ্রেসের এই অবস্থা হতো না।
শুক্রবারই প্রকাশনা সংস্থা রূপা বুকস ঘোষণা করেছে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসেই প্রকাশ পাবে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের অভিজ্ঞতা নির্ভর বইয়ের শেষ খণ্ড ‘দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল ইয়ার্স’। বইটির চতুর্থ ভাগের বেশ কিছু অংশ জাতীয় রাজনীতিতে সাড়া ফেলবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। দেশের রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন প্রণববাবুর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং কংগ্রেসের অন্দরের বেশ কিছু ছবির কোলাজ এই বইয়ের অক্ষরে ফুটে উঠবে বলেই মনে করছে তারা।
সূত্রের খবর, বইয়ের একটি অংশে প্রণববাবু লিখেছেন, “কংগ্রেসের কিছু সদস্য মনে করতেন ২০০৪ সালে আমি যদি প্রধানমন্ত্রী হতাম হয়তো ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের হার আটকানো যেত। যদিও আমি এমনটা মনে করি না। কিন্তু আমারও মনে হয় আমি রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর পার্টির নেতৃত্ব রাজনীতিক দিশা হারিয়ে ফেলেছিল। একদিকে সোনিয়া গান্ধী পার্টির ভিতরের বহু সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হন, অন্যদিকে ডঃ (মনমোহন) সিংয়ের দীর্ঘদিনের অনুপস্থিতি অন্য সাংসদদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক শেষ করে দিয়েছিল।”
এই বইয়ে প্রাক্তন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর তুলনাও টানা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। যে দু’জনের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা হয়েছিল প্রণব মুখোপাধ্যায়ের। একজন মনমোহন সিং, অপরজন নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর, প্রণববাবু লিখেছেন,”আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রী ও তার প্রশাসনের কাজের উপর দেশের সামগ্রিক স্থিতির ছবিটা ধরা পড়ে। একটি সরকারের ক্ষমতা চ্য়ুত হওয়ার দায়ও প্রধানমন্ত্রীর উপর বর্তায়। ” মনমোহন সিংয়ে জোটধর্ম রক্ষার তাগিদ, তাঁর সরকার পরিচালনায় প্রভাব ফেলেছিল বলেও লিখেছেন প্রণববাবু। সেই জায়গায় নরেন্দ্র মোদী প্রথম ভাগে সরকার চালাতে গিয়ে এক নিরঙ্কুশ শৈলী তুলে ধরেছেন। এতে সরকারের সঙ্গে বিচার ব্যবস্থা ও আইনসভার সম্পর্কে তিক্ততা বেড়েছে। সময়ই বলবে, এই সরকার পরবর্তীকালে এই ধারায় বদল আনতে পারবে কি না।