৬ মাস আগে কেন বোঝা গেল না ভ্যাকসিনের প্রয়োজনীয়তা, প্রশ্ন তুললেন ড. গুলেরিয়া

গত ২৪ ঘন্টায় সারা দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এক লক্ষ ৪৫ হাজার

৬ মাস আগে কেন বোঝা গেল না ভ্যাকসিনের প্রয়োজনীয়তা, প্রশ্ন তুললেন ড. গুলেরিয়া
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Apr 10, 2021 | 5:11 PM

নয়া দিল্লি: প্রত্যেকদিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভ্যাকসিনের চাহিদা। পর্যাপ্ত ভ্যাকসিনের অভাবে কোথাও কোথাও টিকাকরণ কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এরই মধ্যে ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউটের কর্ণধার আদর পুনাওয়ালা দাবি করেছেন, ভ্যাকসিনের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে প্রয়োজন আরও টাকার। কিন্তু ৬ মাস আগে কেন এ কথা বোঝা গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন এইমস ডিরেক্টর ড. রণদীপ গুলেরিয়া।

কিছুদিন আগেই আদর পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন উৎপাদন আরও বাড়ানোর জন্য তিন হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। সেই টাকা থাকলে ও মাস তিনেক সময় পেলে তবেই ভ্যাকসিন উৎপাদন চাহিদা মেটানোর মতো বাড়ানো যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ৬ মাস আগে কেন এই হিসেব কষা হলো না তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন এইমসের ডিরেক্টর। ভ্যাকসিনের চাহিদা যে এতটাই তুঙ্গে উঠে সেটা জানার জন্য কোনও রকেট সায়েন্সের প্রয়োজন ছিল না বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এদিকে ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য পুনাওয়ালা যে সাহায্য চেয়েছেন সে কথা সম্প্রতি স্বীকার করেছে কেন্দ্র।

সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রণদীপ গুলেরিয়া বলেন, ‘সিরাম ইনস্টিটিউট শুধু ভারতের জন্য নয় গোটা বিশ্বের জন্য ভ্যাকসিন উৎপাদন করছে। চাহিদা যে অনেক বেশি হবে সে কথা তো আগে থেকেই বোঝা গিয়েছিল। মাস ছয়েক আগে এটা বোঝার জন্য কোন রকেট সাইন্সের প্রয়োজন ছিল না।’ অর্থের প্রয়োজন সম্পর্কে গুলেরিয়া বলেন, ‘অনেকেই ভ্যাকসিন উৎপাদনে বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত ছিল। কারণ ভ্যাকসিন গোটা বিশ্বের প্রয়োজন। আর শুধুমাত্র মানবিকতার জন্য নয় বাজার মূল্য বাড়ানোর জন্য ভ্যাকসিনে বিনিয়োগ করতে রাজি হত অনেক সংস্থাই।’

সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে দেখা গিয়েছে পর্যাপ্ত ডোজ না থাকার কারণে টিকাকরণ কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হয়েছে। আর করোনায় সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই মহারাষ্ট্রই। বৃহস্পতিবার মুম্বাইতে এক ধাক্কায় প্রায় ২৪ টি টিকাকরণ কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হয়েছে। পুনেতে ও ১০০-র বেশি কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে ভ্যাকসিন উৎপাদন নিয়ে।

আদর পুনাওয়ালা সম্প্রতি জানিয়েছেন, সিরাম ইনস্টিটিউট বর্তমানে প্রত্যেকদিন ২০ লক্ষ ডোজ কোভিশিল্ড উৎপাদন করে, অর্থাৎ মাসে প্রায় ৬ থেকে সাড়ে ছয় কোটি। কিন্তু টার্গেটে পৌঁছনোর জন্য সময় এবং অর্থ দুইই প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি। পুনাওয়ালা জানান ইতিমধ্যেই তারা লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। সেখান থেকে সাড়া না মিললে ব্যাংকের কাছে আবেদন জানাবেন তাঁরা।

অন্যদিকে নীতি আয়োগের অন্যতম সদস্য ড. ভিকে পাল জানিয়েছেন, সপ্তাহ খানেক আগে সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত একটি আবেদন পেয়েছেন তারা। এই বিষয়টি নিয়ে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য শনিবার সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্র কেটে বা রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় সারা দেশে নতুন করে করণা আক্রান্ত হয়েছেন এক লক্ষ ৪৫ হাজার মানুষ। অ্যাক্টিভ কিসের সংখ্যা ১০ লক্ষ। করোনার এই দ্বিতীয় ধাক্কা যতই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে, ততই ভ্যাকসিন এর প্রয়োজনীয়তা সামনে আসছে।