
পুরী: পুজোর রীতিনীতি তাও কপিরাইটের আওতাভুক্ত? লেখা, গান, কবিতা, বই সব কিছুর ক্ষেত্রে মালিকানা নির্দিষ্ট করতে ও ‘নকল’ এড়াতে এই কপিরাইট প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়। যা এবার ঢুকে পড়ল মন্দিরে গর্ভগৃহ অর্থাৎ যেখানে ঈশ্বর থাকেন।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্য়ম NDTV সূত্রে খবর, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আচার-অনুষ্ঠান, রীতিনীতির ‘কপিরাইট’ নিতে চায় ওড়িশা সরকার। ইতিমধ্যে আলোচনা চলছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আর কিছুটা সময়ের অপেক্ষা। পুরীর সাম্মানিক রাজা তথা জগন্নাথ মন্দিরের ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যান গজপতি মহারাজ দিব্যসিংহ দেব নিজেও এই কপিরাইট দাবির কথা স্বীকার করেছেন।
একদিকে যখন দিঘার বুকে তৈরি হয়েছে নতুন জগন্নাথ মন্দির। সেই আবহে ওড়িশা সরকার তথা পুরীর মন্দির কমিটির এই সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। কারণ, ইতিমধ্য়েই এই জগন্নাথ মন্দির ঘিরে দুই রাজ্যের প্রশাসনের মধ্যে এমনকি মন্দির কমিটির মধ্য়েও একটা ভাগাভাগি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেই আবহে প্রথমে নিমকাঠ বিতর্ক। তারপর এবার এল পুজোর রীতিনীতির কপিরাইট বিতর্ক।
পাশাপাশি, পুরীর আদলে পশ্চিমবঙ্গের দিঘাতে তৈরি জগন্নাথ মন্দিরকে ‘জগন্নাথধাম’ বলা নিয়ে আপত্তি তুলতে দেখা গিয়েছে ওড়িশার বিজেপি সরকারকে। আপত্তি তুলেছে পুরীর মন্দির কমিটিও। গজপতি মহারাজ তো আবার সর্বভারতীয় সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বলেই ফেলেছেন, এটা ধর্মগ্রন্থ ও প্রাচীন ঐতিহ্যের গুরুতর লঙ্ঘন।
শুধু তাই নয়, ইসকনের বিরুদ্ধে ‘যখন-তখন’ রথযাত্রা এবং স্নানযাত্রা করানোর অভিযোগ তুলেছেন পুরীর এই সাম্মানিক রাজা। তাঁর কথায়, ‘ইসকন বছরের যখন-তখন রথযাত্রা ও স্নানযাত্রা পালন করছে। এমনকি, দিঘার জগন্নাথ মন্দিরকে জগন্নাথ ধামের আখ্যান দিচ্ছে। যা বিশ্বজুড়ে জগন্নাথ ভক্তদের উদ্বিগ্ন করছে। এটা আমাদের ধর্মগ্রন্থ ও প্রাচীন ঐতিহ্যের উপর আঘাত।’
তাঁর সংযোজন, ‘আমরা ইতিমধ্যে মায়াপুরে অবস্থিত ইসকনের সদর দফতরে গোটা ব্যাপারটা জানিয়েছি। তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবেক বিদেশের মাটিতে কীভাবে স্নানযাত্রা হবে, কোন সময়ে হবে সেই নিয়ে এখনও একটা ব্যবধান রয়েছে।’
পুরীর মন্দিরের মতো দিঘার ক্ষেত্রে ‘জগন্নাথধাম’ শব্দটি ব্যবহার আপত্তি জানিয়েছিল ওড়িশা সরকারও। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন রয়েছে’ বলে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝিও।