
নয়াদিল্লি: সংস্থার এক ইঞ্জিনিয়ারের আত্মহত্যার ঘটনায় ‘ওলা’র সিইও বা কার্যনির্বাহী কর্তা তথা প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে দায়ের হল লিখিত অভিযোগ। বেঙ্গালুরুর সুব্রহ্মণ্যপুর থানায় ২৮ পাতার সুইসাইড নোটের ভিত্তিতে ভবেশ আগরওয়াল-সহ একাধিক শীর্ষকর্তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। সেই সুইসাইড নোটে আত্মঘাতী ইঞ্জিনিয়ার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মানসিক হেনস্থা ও আর্থিক চাপ সৃষ্টির অভিযোগ তুলেছেন। ইতিমধ্য়েই এই ঘটনায় বিশদে বিবৃতি দিয়েছে সংস্থা। কর্নাটক হাইকোর্টে যে একটি পাল্টা মামলা করা হয়েছে, সেই কথাই জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
ঘটনা গত মাসের ২৮ তারিখের। বেঙ্গালুরুর চিক্কালাসান্দ্রায় নিজের ফ্ল্যাটেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন অনলাইন ক্যাব পরিষেবা প্রদানকারী ও বৈদ্যুতিক বাইক নির্মাণকারী সংস্থা ‘ওলা’র এক ইঞ্জিনিয়ার। নাম, কে অরবিন্দ। জানা গিয়েছে, ২০২২ সাল থেকে ওই সংস্থায় কাজ করছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ কেন আত্মঘাতী হতে হল তাঁকে? দেহ উদ্ধারের দিন সেই প্রশ্নের উত্তর পুলিশের কাছে ছিল না। তাই প্রাথমিক ভাবে একটি রহস্যমৃত্যুর মামলা দায়ের করে তাঁরা।
এরপরেই এমন একটি ঘটনা ঘটে যা নতুন করে প্রশ্ন তৈরি করে পুলিশের মনে। অরবিন্দের মৃত্যুর দু’দিনের মাথায় তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সাড়ে ১৭ লক্ষ টাকা পাঠানো হয়। এই নিয়ে কোম্পানির এইচআর ও অন্যান্য শীর্ষকর্তাদের প্রশ্ন করা হলে কোনও সদুত্তর দিতে পারে না তাঁরা। ফলত, সন্দেহ আরও গাঢ় হয় বললেই চলে। এই সময়কালে নিহতের ফ্ল্য়াটে তল্লাশি পর্বে একটি ২৮ পৃষ্ঠার সুইসাইড নোট খুঁজে পান তদন্তকারীরা। যেখানে নিহত কে অরবিন্দ সংস্থার সিইও ভবেশ আগরওয়াল-সহ অন্য়ান্য শীর্ষকর্তাদের বিরুদ্ধে মানসিক হয়রানি, কাজের চাপ এবং বেতন না দেওয়ার অভিযোগ তোলেন। এরপরেই গত ৬ অক্টোবর পুলিশের কাছে দ্বারস্থ হয় পরিবার। সংস্থার বিরুদ্ধে দায়ের হয় লিখিত অভিযোগ।
ইতিমধ্য়েই এই ঘটনায় মুখ খুলেছে ‘ওলা’ কর্তৃপক্ষ। সোমবার একটি বিবৃতি দিয়ে সংস্থার মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘অরবিন্দের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় আমরা সত্যিই মর্মাহত। উনি আমাদের সঙ্গে সাড়ে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন। কিন্তু এই কয়েক বছরে নিজের মানসিক চাপ বা অতিরিক্ত কাজের চাপ নিয়ে তিনি কখনও কোনও অভিযোগ জানাননি। এমনকি, সংস্থার শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে তাঁর সরাসরি কোনও যোগাযোগ ছিল না।’ নিহত ইঞ্জিনিয়ারের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে সংস্থা। তাঁর যে টাকা পাওনা তাও দ্রুত ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছে তাঁরা। পাশাপাশি, সংস্থার শীর্ষকর্তাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর-র ভিত্তিতে তারা আদালতে দ্বারস্থ হতে চলেছে বলেও জানান হয়েছে এই বিবৃতিতে।