
নয়াদিল্লি: ফেয়ারওয়েল পার্টিতে অনুশোচনা করেছিলেন দেশের ৫২ তম প্রধান বিচারপতি বিআর গবাই। বারংবার একটাই কথা বলেছিলেন তিনি। নিজের কার্যকালে কোনও মহিলা বিচারপতিকে তুলে ধরতে পারলেন না তিনি। তারপর প্রথামাফিক শীর্ষ আদালতের ব্যাটন তুলে দেন বর্তমান প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্তের হাতে।
গবাইয়ের অনুশোচনা কিংবা সুপ্রিম কোর্টে মহিলা বিচারপতির ঘাটতি কোনওটাই এখনও পূরণ হয়নি। তবু সামান্য আলোকবিন্দু তাও তো কখনও না কখনও হতে পারে আঁধারভেদী। বৃহস্পতিবার সেই আলোকবিন্দু তৈরির কাজটাই করে দিলেন প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। দেশের সকল বার কাউন্সিলে মেয়েদের সংরক্ষণ সুনিশ্চিত করলেন তাঁরা।
এদিন দেশের বার কাউন্সিল (Bar Council of India)-কে প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, রাজ্য ভিত্তিতে তৈরি প্রতিটি বার কাউন্সিলে মহিলাদের অংশীদারিত্ব এবং সংরক্ষণ সুনিশ্চিত করতে হবে। তাতে প্রয়োজন পড়লে নীতি কাঠামোতেও বদল আনতে হবে। মহিলাদের জন্য অন্ততপক্ষে ৩০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে।
তবে শুধু নীতি তৈরি করে ক্ষান্ত হলেই হবে না। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘ঠিক যে ভাবে সংসদে মহিলাদের আসন সংরক্ষণকে সুনিশ্চিত করা হয়েছে। ওই একই পদ্ধতিতে দেশের বার কাউন্সিলগুলিতেও মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণ করতে হবে। পাশাপাশি, মহিলারা যাতে বার কাউন্সিলে উচ্চ পদ পান সেটাও দেখতে হবে।’
কিন্তু আচমকাই এই নির্দেশের কারণ কী? সম্প্রতি এই মর্মেই দেশের শীর্ষ আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন দুই মহিলা আইনজীবী। তারা জানিয়েছিলেন, আইন ও বিচারব্যবস্থার মতো পেশার প্রতি স্তরে মেয়েরা নিজেদের পরিস্থিতির উত্থান ও উন্নয়ন ঘটালেও বার কাউন্সিলের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তাঁরা যেন কার্যত ‘অদৃশ্য’। যোগ্য হয়েও যেন ‘বঞ্চিত’। আর এই পরিস্থিতি ফুটে উঠেছে খাতায় কলমেও। বর্তমানে দেশের ১৮টি রাজ্যের বার কাউন্সিলে মোট ৪৪১ জন নির্বাচিত প্রতিনিধির মধ্যে মাত্র ৯ জন মহিলা। অর্থাৎ মোটের মাত্র ২ শতাংশ। এই বঞ্চনার ছবিই যেন ভাবিয়েছে বিচারপতিদের। তারপরই সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা।