
মুম্বই: গত বছর নির্বাচনে জয়ের পর রাজ্য়ের আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মহিলাদের জন্য লাড়কি বহীণ প্রকল্প শুরু করে মহারাষ্ট্র সরকার। যার আওতায় মহিলাদের প্রতি মাসে দেড় হাজার টাকা ভাতা প্রদানের ঘোষণা করে তারা। শর্ত রাখা হয়, যে সকল পরিবারের বার্ষিক আয় আড়াই লক্ষ বা তার নীচে। তারাই একমাত্র এই সরকারি অনুদান পাবেন।
মহারাষ্ট্রের নির্বাচন পর্বে বিজেপি সরকারের তুরুপে তাস হয়েছিল এই মহিলা-অনুদান প্রকল্প। বাংলার তৃণমূল সরকার আবার বলেছিল, লক্ষ্মীর ভান্ডারের ‘নকল’। তবে এই লাড়কী বহীণ প্রকল্পের ডিভিডেন্ড যে পেয়েছে বিজেপি ,তা নিয়ে কোনওই সন্দেহ নেই। কিন্তু বছর ঘুরতেই সেই প্রকল্প যেন ‘গলার কাঁটা’। বিতর্কের মুখে পড়েছে মহারাষ্ট্রের শরিক সরকার।
সম্প্রতি নারী ও শিশু উন্নয়ন বিভাগের একটি সমীক্ষায় একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, গত ১০ মাসে নারীদের পাশাপাশি এই প্রকল্পের ‘লাভের গুড়’ খেয়েছে পুরুষরাও। তথ্য বলছে, এই সময়কালে এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতি মাসে দেড় হাজার টাকা অনুদান পেয়েছেন ১৪ হাজার ২৯৮ জন পুরুষ। অভিযোগ, অনলাইন রেজিস্ট্রেশনে কারচুপি করে নিজেদের মহিলা পরিচয় দিয়েছেন এই ভুয়ো উপভোগকারীরা। যার জেরে সরকারি তহবিল থেকে খরচ হয়েছে বাড়তি ২১ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা।
এদিন উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার বলেন, ‘লাড়কি বহীণ প্রকল্প গরিব মহিলাদের জন্য সূচনা হয়েছিল। কিন্তু কীভাবে এই প্রকল্পের সুবিধা পুরুষরা পেল, তা জানা নেই। তবে আমরা এই টাকা উদ্ধার করেই ছাড়ব এবং সেই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মেয়েদের টাকা যাচ্ছে পুরুষদের পকেটে। সুতরাং সমালোচনা তো হবেই। এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে বলেন, “এরা কীভাবে প্রকল্পে আবেদন করেছিলেন? কে তাঁদের সাহায্য করেছিল? এর নেপথ্যে বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে। অবিলম্বে তদন্ত প্রয়োজন।” এদিন কুণাল ঘোষ বলেন, “লক্ষ্মীর ভান্ডার যা মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট। কিন্তু সেটা ওখানে প্রতারণার মাধ্য়মে কয়েক জন লুটে নিয়েছে। এরপরেও ওখানে কেন সিবিআই হবে না? ওখানে কেন কেন্দ্রীয় মহিলা কমিশন যাবে না? কেন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম যাবে না?”
তাঁর সংযোজন, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রথম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছিলেন। তখন এরা সব হইহই করল। এরপর যখন দেখল, এটা দরকার। তারপর নিজেদের রাজ্যে করল। ১৪ হাজার পুরুষ মহিলাদের টাকা তুলে নিয়ে গেল।’