
ইম্ফল: অব্যাহত হিংসার ছবি। প্রায় বছর দেড়েক কাটিয়েও শান্ত হয়নি মণিপুর। হিংসার লাল চক্ষু যেন এখনও নজরদারি চালাচ্ছে উত্তর-পূর্ব ভারতের সেই রাজ্যে। মাঝে দিন কয়েকের জন্য সেই রাজ্যের কিছু এলাকায় সেনা-শাসনও জারি হয়েছিল বটে, তবে তাতেও যে হিংসার ছবিতে বদল এসেছিল এমনটা নয়।
অবশেষে সেই বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপে ভরে ওঠা মণিপুরকে শান্ত করতে নিয়ে নেওয়া হল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। জারি হল রাষ্ট্রপতি শাসন। গত ৯ই ফেব্রুয়ারি সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন এন বীরেন সিংহ। রাজনীতির পিচে সেই ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি বললেই চলে। আর তার আগেই বদলে গেল মণিপুর। রাজ্য সরকার নয়। এবার রাষ্ট্রপতির হাতে গেল সেই রাজ্যের শাসনভার।
উল্লেখ্য, রাজ্য়ের টালমাটাল পরিস্থিতির কারণে নিজের দলের মধ্য়ে চাপে পড়েছিলেন এন বীরেন সিংহ। বিরোধী শিবির তো বটেই, দলের নেতারাও নাকি ছেড়ে কথা বলছিল না তাঁকে। সূত্রের খবর, তিনি পদত্য়াগ না করলে হয়তো খুব শীঘ্রই তাঁর বিরুদ্ধে বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনতেন দলেরই একাংশের নেতা।
সে রাজ্যের পদ্ম শিবিরের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে তৈরি হওয়া চাপানউত্তোর পরিস্থিতি সম্পর্কে আগাম টের পেয়েছিল বিজেপির দিল্লির নেতারাও। দলীয় সূত্রে খবর, পরিস্থিতিকে সামাল দিতেই ও মণিপুরে যাতে বিরোধীরা বাড়তি মাইলেজ না পায়, সেই বিষয়টিকে রুখতে রবিবার সকালে নয়াদিল্লিতে বীরেনকে নিয়ে বৈঠকে বসেন শাহ ও নাড্ডা। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি ও নাগা পিপলস ফ্রন্টের ১৪ জন বিধায়কও। আর সেই বৈঠকের পর ইম্ফলে ফিরে ইস্তফা দেন এন বীরেন সিংহ।
বীরেনের পদত্যাগের পরেই রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী মুখ নির্বাচনে বৈঠকে বসেছিল মণিপুরের উচ্চ স্তরের নেতারা। জানা যায়, গভীর রাত অবধি চলেছিল মুখ নির্বাচনের পর্ব। কিন্তু আখেড়ে কোনও মতেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেনি তারা। আর তারপরই এদিন জারি হল রাষ্ট্রপতি শাসন।
বৃহস্পতিবার এই প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর বয়ানে লেখা রয়েছে, ‘আমি মণিপুরের রাজ্যপালের তরফ থেকে রিপোর্ট পেয়েছি। যা দেখে এটা কার্যত স্পষ্ট সেখানে সরকার চালানো সম্ভব নয়। তাই এই সিদ্ধান্ত।’