
নয়াদিল্লি: দিল্লি বিস্ফোরণ-কাণ্ডের পর গোটা তদন্তের অভিমুখ যেন নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিয়েছেন চিকিৎসক শাহিন সাইদ। ফরিদাবাদে তাঁর ঘর থেকেই উদ্ধার হয়েছিল কেজি কেজি বিস্ফোরক। যে বিস্ফোরকের জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ক্রাউড ফান্ডিং’ পর্যন্ত করেছিলেন বলে অভিযোগ। তবে চিকিৎসক হিসাবে নয়, সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিজের অদ্ভূত আচরণের জন্য পরিচিত ছিলেন শাহিন।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম NDTV-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্য়ালয়ে থাকাকালীন নিজের সঙ্গে একটি জপমালা বা আরবি ভাষায় বলতে গেলে, তসবিহ রাখতেন শাহিন। থাকত একটি হাদিসের বইও। আর বিকাল ৪টে বাজলেই শুরু হত তাঁর ‘আসল কাজ’। অদৃশ্য হয়ে যেতেন তিনি। কাউকে না জানিয়ে চলে যেতেন নিজের ‘ডেরায়’। কিন্তু কি সেই ‘আসল কাজ’, তা জানা সম্ভব হয়নি? শাহিনের সহকর্মীরা এনডিটিভি-কে জানিয়েছে, তাঁর আচরণ একেবারেই অন্য রকম ছিল। প্রতিষ্ঠানের কোনও নিয়মের ধার ধারত না শাহিন। থাকত নিজের মতোই।
প্রসঙ্গত, এই মহিলা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দিল্লির বিস্ফোরণ-কাণ্ড নিয়ে এখনও সরাসরি কোনও অভিযোগ ওঠেনি। তবে গত সোমবার জম্মু-কাশ্মীর ও উত্তর প্রদেশ পুলিশ একটি যৌথ অভিযান চালিয়ে লখনউতে তাঁর বাড়ি থেকে কেজি কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে, উদ্ধার করেছে একটি একে-৪৭ অ্যাসল্ট রাইফেলও। এরপরই শাহিনকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, শাহিনের হদিশ পাওয়া যায় ফরিদাবাদেরই সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসক মহম্মদ মুজাম্মিলের থেকে। তাঁর বাড়ি থেকেও মোট ৩৬০ কেজি বিস্ফোরক এবং বেশ কিছু অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধার হয় ২০টি বোমার টাইমার, রিমোট, ওয়াকিটকিও।
শাহিনের বাবা সঈদ আনসারি ছিলেন বন বিভাগের কর্মী। শাহিন তাঁর বাবা-মায়ের দ্বিতীয় সন্তান। তাঁর দুই ভাই এবং এক বোন রয়েছে। কয়েক বছর আগেই মহারাষ্ট্রের জাফর হায়াত নামে এক ব্যাক্তির সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। কিন্তু ২০১৫ সালে বিবাহবিচ্ছেদের পর নিজের কানপুর মেডিক্যাল কলেজের চাকরি ছেড়ে ফরিদাবাদে চলে যান তিনি। বলে রাখা প্রয়োজন, এই ফরিদাবাদে যাওয়ার আগে ও বিবাহবিচ্ছেদের কয়েকদিন পর উধাও হয়ে যান শাহিন। কোথায় গিয়েছিলেন তিনি? এই সময়ই কি তৈরি হল জইশ-যোগ?