জ্যোতির্ময় রায় : করোনার (Corona) আক্রমণে বিশ্ব যখন ত্রস্ত, তখন আশার আলো দেখাল অস্ট্রেলিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক দল। একটি পরীক্ষামূলক অ্যান্টিভাইরাল থেরাপি (siRNA-nanoparticle) তৈরি করেছেন এই বিজ্ঞানীরা। যা ভাইরাল লোডকে ৯৯.৯৯ শতাংশ কম করতে পারে বলে দাবি। এবং এর ফলে আগামীতে কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে একটি নতুন চিকিৎসা পদ্ধতিও আসতে পারে।
বর্তমানে করোনা চিকিৎসার জন্য অনেক সময় অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ তামিফ্লু, জানামিভির এবং রেমডেসিভির ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে রেমডেসিভির ব্যবহার সম্পর্কে আবার সাবধানবাণী দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। এই প্রেক্ষিতে নয়া আশার আলো দেখাচ্ছে অ্যান্টিভাইরাল থেরাপি।
নতুন অ্যান্টিভাইরাল পদ্ধতিতে ভাইরাসের জিনোমে সরাসরি আক্রমণ করার জন্য siRNA (ছোট-হস্তক্ষেপকারী আরএনএ) জিন-সিলেন্সিং আরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। যা ভাইরাসটিকে প্রতিলিপি করা থেকে বিরত রাখবে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। এই বিষয়ে মেনজিজ হেলথ ইনস্টিটিউট কুইন্সল্যান্ডের (MHIQ) অধ্যাপক ও গবেষক নাইজেল ম্যাকমিলান বলেন, “ভাইরাস-নির্দিষ্ট এসআইআরএনএ (siRNA)-এর সাহায্যে চিকিৎসা ভাইরাল লোডকে ৯৯.৯৯ শতাংশ কম করবে।”
এসএআরএস-কোভ -২ সংক্রামিত ইঁদুরে এই থেরাপি পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন এতে উল্লেখযোগ্য ফল মিলছে। এমনকি ফুসফুসেও কোনও ভাইরাসও শনাক্ত করা যাচ্ছে না। সম্প্রতি এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে মলিকিউলার থেরাপি জার্নালে।
সিটি অফ হোপের জেন থেরাপি কেন্দ্রের অধ্যাপক এবং সহযোগী পরিচালক কেভিন মরিস বলেন, এই চিকিৎসায় সমস্ত বেটাকোরোনভাইরাস যেমন, অরিজিনাল এসএআরএস ভাইরাসের (SARS-CoV-1) পাশাপাশি SARS-CoV-2 এবং ভবিষ্যতে উদ্ভূত যে কোনও নতুন রূপগুলিতেও কাজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। কারণ এটি ভাইরাস জিনোমের আলট্রা-সংরক্ষিত অঞ্চলগুলিতেও কাজ করছে।
আরও পড়ুন: তাইল্যান্ড থেকে এল ১৫ কোটি লিটার অক্সিজেন, দেশকে বাঁচাতে মহৎ উদ্যোগ মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের
তাছাড়া, এই ন্যানো পার্টিকালগুলি ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ১২ মাসের জন্য এবং সাধারণ তাপমাত্রায় এক মাসেরও বেশি সময় স্থিতিশীল থাকতে পারে। যার ফলে করোনা সংক্রামিত রোগীদের চিকিৎসার জন্য স্বল্প-সংস্থান ব্যবস্থায় ব্যবহার করা যেতে পারে এই পদ্ধতি। এখন দেখার করোনা বিধ্বস্ত বিশ্বে আগামীতে আশাব্যঞ্জক ফল দেখাতে পারে কিনা এই চিকিৎসা পদ্ধতি।