‘পকসো আইনে শিশুর সংজ্ঞাতেই গুরুতর অসুবিধা’, পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের

Supreme Court on Definition of child in POCSO: ২০১২ সালের যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা আইন, অর্থাৎ পকসো (POCSO) আইনে 'শিশু'র সংজ্ঞা নিয়ে 'গুরুতর সমস্যা' রয়েছে। এক মামলার শুনানির সময় গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।

'পকসো আইনে শিশুর সংজ্ঞাতেই গুরুতর অসুবিধা', পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের
পকসো আইনে 'শিশু'র সংজ্ঞা নিয়ে 'গুরুতর সমস্যা' রয়েছে, বলল সুপ্রিম কোর্ট
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 11, 2022 | 9:49 PM

নয়া দিল্লি: ২০১২ সালের যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা আইন, অর্থাৎ পকসো (POCSO) আইনে ‘শিশু’র সংজ্ঞা নিয়ে ‘গুরুতর সমস্যা’ রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) মাদ্রাজ হাইকোর্টের একটি রায়কে চ্যালেঞ্জ করে করা এক আবেদনের শুনানির সময় এই পর্যবেক্ষণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, ১৮ বছরের থেকে সামান্য কম বয়সী মেয়েরা, কোনও প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের সঙ্গে সম্মতিক্রমে শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হলে, পকসো ধারায় মামলার রায় দেওয়া খুবই সমস্যাজনক হয়ে ওঠে।

১৭ বছর এবং ১০ মাস বয়সী এক মেয়ের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার জন্য এক ব্যক্তিকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। নিম্ন আদালতের রায়কে ওই ব্যক্তি মাদ্রাজ হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। পকসো আইনের ৬ নম্বর ধারার অধীনে সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। তারপরই উচ্চ আদালতের রায়কে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেন তিনি। আবেদনকারীর আইনজীবী, শীর্ষ আদালতে জানান, শারীরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের সম্মতি ছিল। পরে তারা বিবাহও করেছে এবং গত ৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে তারা একসঙ্গে সুখে বসবাস করছে। পকসো আইনের অপব্যবহারের ফলে সুখি দম্পতিদের কীভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে, তারও বেশ কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরেন আবেদনকারীর আইনজীবী।

এই আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি ইন্দিরা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন এক বেঞ্চ মৌখিকভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে, “আমরা (বিচারপতিরা) সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি…পকসো আইনের অধীনে “শিশু”র যে সংজ্ঞা রয়েছে, তার কারণে গুরুতর অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে। আইনটির ২-এর ঘ ধারার অধীনে, আঠারো বছরের কম বয়সী যেকোনও ব্যক্তিকেই শিশু হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।” বেঞ্চের আরেক সদস্য বিচারপতি এম এম সুন্দরেশ, বলেছেন, “কিছু কিছু উপজাতীয় এলাকায়, মেয়েদের ১৫-১৬ বছর বয়সে বিয়ে হয়ে যায়। যখন তারা প্রসবের জন্য হাসপাতালে আসেন, তখন তাঁদের স্বামীদের বিরুদ্ধেও পকসো আইনের অধীনে মামলা করা হয়।” বর্তমান মামলার প্রেক্ষিতে বিচারপতি সুন্দরেশ আরও বলেন, “ওরা বিবাহিত, স্বামীকে এখন কারাগারে পাঠিয়ে লাভ কি? এখন মেয়েটি কী করবে?”

বিচারপতি ইন্দিরা বন্দোপাধ্যায় আরও জানান, আঠারো বছরের থেকে সামান্য কম বয়সী মেয়েরা নিজেদের ইচ্ছেতেই কোনও প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হলে, সাধারণত পকসো আইনের ধারায় মেয়েটির অভিভাবকরা অভিযোগ করে থাকেন পুরুষটির বিরুদ্ধে। বিচারপতি বলেন, “মহিলাদের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে। আমরা এই ইস্যুতে অনেক সভা সম্মেলন করছি। কিন্তু, এটা একটা গুরুতর সমস্যা হয়ে উঠছে। যদি মেয়েটি পকসো বা অন্যান্য আইনের অধীনে অভিযোগ করে, তবে সেখানে কোনও প্রশ্ন থাকে না। কিন্তু যদি তার বদলেতার বাড়ির লোক অভিযোগ দায়ের করে, তাহলেই সমস্যা তৈরি হয়।” বর্তমান মামলার ক্ষেত্রে বিবাহের সত্যতা যাচাই করার জন্য বেঞ্চ দুই পক্ষের কাছেই বিবাহের শংসাপত্রের অনুলিপি চেয়েছে।