
নয়াদিল্লি: আর চলবে না হাতে টানা রিকশা। বুধবার সেই ঘোষণাই করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতাতে আগেই এই রিকশা ‘নিষিদ্ধ’ হয়েছিল, তবু কলকাতার পথে-ঘাটে, অলিতে-গলিতে এই রিকশা চলতে হামেশাই দেখা যায়। এবার সেই হাতে টানা রিকশাকে মুম্বইতেও ‘নিষিদ্ধ’ করল শীর্ষ আদালত।
কলকাতার মতোই মুম্বইয়ের মাথেরানে চলে এই হাতে টানা রিকশা। বুধবার সেই নিয়েই মামলা উঠেছিল শীর্ষ আদালত। যা শুনছিল প্রধান বিচারপতি বিআর গভাই নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ়। সেখানেই হাতে টানা রিকশার প্রচলনকে ‘অমানবিক’ ও ‘সাংবিধানিক মূল্যবোধের পরিপন্থী’ বলেই পর্যবেক্ষণ বিচারপতির।
আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, “এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক যে ৪৫ বছর আগে এই সংক্রান্ত একটি মামলায় সুপ্রিম-রায়ের পরেও মাথেরানে এখনও এই রিকশা চলছে। মানুষ-মানুষকে বয়ে বেড়ানোর এই প্রথা সত্যি অমানবিক।” তবে এই মানুষগুলি কি সত্যিই ইচ্ছাকৃত ভাবে এখনও ‘মানুষ বয়ে’ বেড়াচ্ছেন। এই নিয়ে ভাবিত আদালত।
প্রধান বিচারপতি বিআর গভাই বলেন, “আমরা জানি, কেউ স্বেচ্ছায় রিকশা চালান না। নেহাত জীবিকা নির্বাহের জন্য আর কোনও উপায় নেই তাদের। আর ভারতের মতো দেশে এখনও এই পেশা চলছে, তা দেখে আদতেই সংবিধানে উল্লিখিত জনগণের মৌলিক অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে। দেশ স্বাধীনতা অর্জনের ৭৮ বছর পর এবং সংবিধান প্রণয়নের ৭৫ বছর পরেও এই পেশা অব্যাহতি সত্যিই দুভার্গ্যজনক।”
এরপরেই মাথেরানেও হাতে টানা রিকশা নিষিদ্ধ করে শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি, রাজ্যকে আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই পেশা বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু যারা এই পেশার উপর নির্ভর করে পেট চালান, তাদের কি হবে? সেই উত্তরও দিয়েছে আদালত। রাজ্য় সরকারকে ওই হাতে টানা রিকশা চালকদের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি, এই পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে সরকার যাতে পরিবেশবান্ধব ই-রিকশার দিকে নজর দেয়, সেই পরামর্শও দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।