নয়াদিল্লি: প্রায় বছর চল্লিশ পর অবশেষে মিলল ধর্ষণ মামলার বিচার। ঘটনা ১৯৮৬ সালের। নাবালিকাকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার করা হয় রাজস্থানের ২১ বছরের এক যুবককে। প্রথমে ট্রায়াল কোর্টে ওঠে মামলা। এক বছরেই বিচার পান নির্যাতিতা। অভিযুক্তকে সাত বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক।
তারপরেই নিম্ন আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি দ্বারস্থ হন রাজস্থান হাইকোর্টে। এই মামলার শুনানির জন্য মোট ২৬ বছর সময় নেয় সেই আদালতে। তারপর বেশ কয়েক বছর চলে মামলা। অবশেষে ছয় পাতার রায় জারি করে অভিযুক্তকে খালাস করে আদালত। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, নাবালিকাকে তার ধর্ষণের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে, সে নীরব থাকে। কোনও উত্তর দেয় না। সেই ভিত্তিতে আদালতে মামলা থেকে রেহাই পান অভিযুক্ত।
এরপর এই মামলা ওঠে দেশের শীর্ষ আদালতে। রাজস্থানের হাইকোর্টের রায়কে চ্য়ালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হন নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবার। ইতিমধ্য়ে কেটে গিয়েছে, কয়েকটা দশক। কিন্তু তখন সেই নৃশংস ঘটনার বিচার পাননি তিনি।
অবশেষে একটার পর আদালত ঘুরে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি বিক্রম নাথ ও সঞ্জয় কারলের ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে এই ধর্ষণের মামলা। সেখানে ২০১৩ সালে রাজস্থান আদালতের দেওয়া রায় খারিজ করে বিচারপতির বেঞ্চ। তাদের পর্যবেক্ষণ, ট্রায়াল কোর্টে ধর্ষণের প্রসঙ্গে নির্যাতিতার রেকর্ড বয়ান করা হলে, তিনি চুপ করে থাকেন। শুধুই কাঁদতে থাকেন। আর এই ভিত্তিতে কখনও উচ্চ আদালত অভিযুক্তকে রেহাই দিতে পারে না।
বিচারপতি সঞ্জয় কাড়ল জানান, ‘নির্যাতিতার চোখের জলের দামটা বুঝতে হবে। তার নীরবতা কখনওই অভিযুক্তের নির্দোষ সাব্যস্ত হওয়ার মাধ্যম হতে পারে না। বরং এই চোখের জলটাই তার সঙ্গে চলা যন্ত্রণার কথা বলে।’ দুই বিচারপতির আরও দাবি, সমস্ত মেডিক্যাল এভিডেন্সের ভিত্তিতে বলা যেতে পারে সেই মেয়েটির উপর যৌন নির্যাতন চলেছিল।
প্রসঙ্গত, ২১ বছর বয়সে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছিল এই মামলা। কারাদণ্ডের সাজা পেলেও, হাইকোর্টে রেহাই পেয়েছিলেন তিনি। যখন সুপ্রিম কোর্টে মামলা গড়াল তার বয়সে ছুঁয়েছে ৬০। এবার বৃদ্ধ অভিযুক্ত আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ শীর্ষ আদালতের।