
নয়াদিল্লি: ছয় দিনের সফরে ভারতে এসে যোগী রাজ্যে গেলেন আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। শনিবার উত্তর প্রদেশের দারুল উলুম দেওবন্দে গেলেন তিনি। দেখা করলেন দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিমদের সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপাচার্যের সঙ্গেও। কিন্তু কূটনৈতিক সফরে এসে হঠাৎ কেন এই ইসলামিক শিক্ষাঙ্গনে গেলেন তিনি? রয়েছে কি কোনও যোগসূত্র?
এদিন দিল্লি থেকে সড়কপথেই দেওবন্দে পৌঁছে যান আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী। তাঁকে দারুল উলুমে স্বাগত জানাতে দেখা যায় খোদ উপাচার্য আবুল কাশিম নোমানিকে। এছাড়াও, তালিবান মন্ত্রীর আগমনে শিক্ষাঙ্গনে উপস্থিত ছিলেন দারুল উলুমের সভাপতি-সহ অন্য়ান্য কর্তারাও। মুত্তাকির উপরে হয় পুষ্পবৃষ্টি। খুশিতে গদগদ হয়ে যান তিনি। আর তারপর বলেন, ‘আমরা আফগান-দূতদের পাঠাব। আমি আশা রাখি, আপনারাও কাবুলে আসবেন। আর এই ভাবেই দিল্লির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক মজবুত হবে।’
যোগীরাজ্য উত্তর প্রদেশের শাহারানপুরের দেওবন্দে অবস্থিত এই দারুল উলুম। গোটা দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিমদের কাছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত প্রভাবশালী। যার শুরুটা হয়েছিল একটা গাছের তলায় বসে ইসলাম চর্চার মাধ্যমে। শনিবার সেই প্রাচীন দারুল উলুমেই পা রাখলেন তিনি।
দারুল উলুমের গুরুত্ব তালিবানদের কাছেও কম নয়। বিশেষত, আদর্শগত দিক থেকে। বলা হয়, বর্তমান তালিবান সরকারের বহু শীর্ষ নেতা, এমনকি, তাদের নানা সংগঠনের বহু শীর্ষ কমান্ডার পাকিস্তানের দারুল উলুম হাক্কানিয়া থেকেই পড়াশোনা করেছেন। এই পাকিস্তানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আবার যোগ রয়েছে এই যোগীরাজ্যের দারুল উলুমের। দেওবন্দের আদর্শে তৈরি করা হয়েছিল ওই দারুল উলুমটি। এমনকি, তালিবানদের সূত্রপাতটাও এই দারুল উলুমই।
তালিবান কথার অর্থ ছাত্র। পাকিস্তানের দারুল উলুমের প্রতিষ্ঠাতা মৌলানা আব্দুল হক। তিনি নিজে পড়াশোনা করেছিলেন উত্তর প্রদেশের দেওবন্দের দারুল উলুমে। তারপর সেখানে শিক্ষক হিসাবে যোগদানও করেন। পরবর্তীতে পাকিস্তানে দারুল উলুম গঠন। আর এই আব্দুল হকের পুত্র সামি-উল-হক হলেন তালিবানদের জনক। ২০১৮ সালে খুন হন তিনি। আর ২০২৫ সালে, তাঁরই প্রতিষ্ঠিত ‘উত্তরসূরি’ এলেন যোগীরাজ্য়ের দারুল উলুমে।