Tejashwi Yadav: নেতাও ভুয়ো ভোটার কার্ড? কমিশনের প্রশ্নে কী জবাব দিলেন তেজস্বী?

Tejashwi Yadav: সোমবার পটনাতেই তেজস্বীর বিরুদ্ধে দু'টো ভোটার কার্ড ব্যবহারের অভিযোগ তুলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন এক আইনজীবীও।

Tejashwi Yadav: নেতাও ভুয়ো ভোটার কার্ড? কমিশনের প্রশ্নে কী জবাব দিলেন তেজস্বী?
Image Credit source: Getty Image

|

Aug 05, 2025 | 2:07 PM

পটনা: নেতার ভুয়ো ভোটার কার্ড। এও সম্ভব? এই নেতা কিন্তু যেমন-তেমন কোনও নেতা নয়। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তেজস্বী যাদব। যার ভোটার কার্ড এখন দেশের রাজনীতির মুখরোচক চর্চার বিষয়।

পয়লা অগস্ট নির্বাচন কমিশন বিহারে বিশেষ ও নিবিড় পরিমার্জনের ‘ফলাফল’ প্রকাশ করল। পরিভাষা অনুযায়ী, খসড়া ভোটার তালিকা। কারওর নাম রইল। কেউ বাদ গেল। অবশ্য এই ‘কেউ’য়ের মধ্য়ে বেশির ভাগটাই মৃত-স্থানান্তরিত। তাই তালিকা নিয়ে কেউ রা কাটল না, কেউ অভিযোগ করল না। নির্বাচন কমিশন নিজে বিবৃতি দিয়ে জানাল, খসড়া তালিকা প্রকাশের তিন দিন কেটে গেলেও বিহারে কোনও রাজনৈতিক দলের তরফে একটিও অভিযোগ জমা পড়েনি। সত্যিই কি তাই? অভিযোগ কিন্তু উঠেছিল। বৃহত্তর অভিযোগ।

কে করেছিলেন? রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা।

বিহারের খসড়া তালিকা প্রকাশ হতেই গর্জে উঠলেন তেজস্বী যাদব। শুক্রবার তালিকা প্রকাশ। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে লালু-পুত্র বললেন, কমিশনের অ্যাপে ভোটার কার্ডে থাকা এপিক নম্বর দিয়ে তিনি নাম খোঁজার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বারবার খোঁজার পরেও কোনও লাভ হয়নি। কারণ, তার ফোনের স্ক্রিনের প্রতিবারই ভেসে উঠেছে এই সংক্রান্ত কোনও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। এরপরেই বিদ্রুপের সুরে তেজস্বী বলে ওঠেন, “ভোটার তালিকায় আমার নাম নেই। আমি ভোটে লড়ব কীভাবে?

বিরোধী দলনেতা বলছেন, ভোটে দাঁড়াব কীভাবে? রাজনৈতিক স্তরে এটা বৃহত্তর অভিযোগ। বলা চলে, বিরল থেকে বিরলতম। যার জেরে স্বাভাবিক নিয়মেই চাপে পড়ে বিজেপি। আর মাসকতক আগে দিঘা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো ইঙ্গিতে এই কথাগুলিই বলতে চেয়েছিলেন। তবে কি তাঁর ভবিষ্যদ্বাণীই সত্যি হল? বিহারে যে ৬০ লক্ষের অধিক ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে তাদের মধ্যেই পড়ে গেলেন তেজস্বীও?

নির্বাচন কমিশন, তারা এই সব দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি, তেজস্বী নিজে অভিযোগ করে বিপাকে পড়ে গিয়েছেন। বিহারের বিরোধী দলনেতা যখন সাংবাদিক বৈঠক থেকে নিজের ভোটার কার্ড তুলে প্রশ্ন ছুড়লেন কেন তাঁর নাম বাদ পড়েছে, ক্ষণিকের মধ্যেই সেই প্রশ্নের উত্তর দিল কমিশন। সেই সূত্র ধরে কোটে বল পেল বিজেপি।

বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতাকে নোটিশ পাঠিয়ে কমিশন জানায়, “ক্রমিক নম্বর ৪১৬-তে তেজস্বীর নাম রয়েছে। তাই তেজস্বীর দাবি মিথ্যা। আর সেই তালিকা অনুযায়ী তেজস্বীর ভোটার কার্ডের এপিক নম্বর আরএবি ০৪৫৬২২৮। এদিকে সাংবাদিক বৈঠকে দেখানো কার্ডের এপিক নম্বর আরএবি ২৯১৬১২০।”

তা হলে ভুয়ো ভোটার কার্ড দেখালেন তেজস্বী? এই প্রশ্ন ঘুরপথে তুলে দিয়েছে কমিশনও। তেজস্বী সেই ভোটার কার্ড কোথায় পেলেন সেই প্রশ্ন করেছে তারা। এমনকি, সোমবার পটনাতেই তেজস্বীর বিরুদ্ধে দু’টো ভোটার কার্ড ব্যবহারের অভিযোগ তুলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন এক আইনজীবীও।

কেন দু’টি ভোটার কার্ড সেই নিয়ে তেজস্বী কমিশনকে এখনও কিছু জানাননি। বরং তাদের ত্রুটিকে ইস্যুকে করে হাইকোর্টে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের তেজস্বী বলেন, “এত চিন্তার কী আছে? আমি কমিশনকে জবাব দিয়ে দেব। কমিশনের উচিত বুথে বুথে কত নাম বাদ গেল বলা। একজন আমলারও দেখলাম নাম বাদ গিয়েছে। অন্যদিকে আবার একই পরিবারের ৫০ জনের নাম আবার তালিকায় জুড়ে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের প্রচুর ভুল ভ্রান্তি রয়েছে। আমার কাছে তার তথ্য প্রমাণও রয়েছে। পাঠাব সেগুলো। পাশাপাশি, আদালতেও নিজের পক্ষে ব্যবহার করব।”

বিহারে ভোটার সমীক্ষা মিটেছে। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, বাংলাতেও হবে। সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই তৎপর কমিশন। এবার যেখানে বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন উপমুখ্য়মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভুয়ো ভোটার কার্ড ব্যবহারের প্রশ্ন উঠছে, এই একই পরিস্থিতি কি বাংলাতেও হতে পারে? নেতারই বা দু’টো ভোটার কার্ড হয় কীভাবে? এবার বাংলায় যদি সমীক্ষা হয়, তা হলে এখানে কত ভুয়ো ভোটার প্রকাশ্যে আসবে? তা অবশ্য সরেজমিনে খতিয়ে দেখবে কমিশন। বাকিটা তাদেরই হাতে।