
নয়াদিল্লি: বিল আটকে রাখতে পারবেন না রাজ্যপাল। ‘প্রেসিডেন্সিয়াল রেফারেন্স’ মামলায় বৃহস্পতিবার এমনই পর্যবেক্ষণ দেশের শীর্ষ আদালতের। এদিন প্রধান বিচারপতি বিআর গবাই নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে চলছিল এই রাজ্যপাল ও রাষ্ট্রপতির বিল আটকে রাখার মামলা। প্রধান বিচারপতি ছাড়া বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি পিএস নরসিংহ এবং বিচারপতি এএস চন্দরকর।
এদিনের শুনানি পর্বে একদিকে যেমন রাজ্যপালের বিল আটকে রাখার প্রসঙ্গে অসম্মতি প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত। ঠিক তেমনই এই বিলের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি কিংবা রাজ্যপালকে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া যায় না বলেও পর্যবেক্ষণ সাংবিধানিক বেঞ্চের। এই ক্ষেত্রে অনুচ্ছেদ ১৪৩ উদ্ধৃত করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে , কোনও বিল নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে প্রতিবার শীর্ষ আদালতের মতামত চাইতে হবে, এমনটা হয় না এবং তা বাধ্যতামূলকও নয়। পাশাপাশি, একটি বিল পাশ বা খারিজ করার জন্য সংবিধান রাজ্যপালকেও বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছে বলেই পর্যবেক্ষণ আদালতের।
উল্লেখ্য, কোনও বিল আইনসভায় পাশ হওয়ার পর রাজ্যপালের কাছে গেলে তাঁর কী করণীয়, সেই ব্য়াখ্যাও শুনানি পর্বে তুলে ধরেছে সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার সাংবিধানিক বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, একটি বিলের নিরিখে রাজ্যপালের সামনে তিনটি সাংবিধানিক বিকল্প রয়েছে।
এই তিনটির মধ্যে কোনও সাংবিধানিক বিকল্পটি তিনি বেছে নেবেন, তা তাঁর সিদ্ধান্ত। এখানে আদালত কিছু বিবেচনা করতে পারে না বলেই মত বেঞ্চের।
এই ‘প্রেসিডেন্সিয়াল রেফারেন্স’ মামলার প্রথম থেকেই একটি প্রসঙ্গ জুড়ে গিয়েছিল, তা হল ‘ডিমড অ্যাসেন্ট’ বা নিশ্চুপ সম্মতি। যার অর্থ হল, দিনের পর দিন বিল আটকে রাখা মানে বুঝে নিতে হবে আদালতের হস্তক্ষেপে বিলগুলিতে সম্মতি প্রদান করানো যেতে পারে। তবে বুধবার দেশের শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এই ‘তত্ত্ব’ সংবিধান পরিপন্থী। এমনটা হতে পারে না। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘আমাদের বলতে কোনও দ্বিধা নেই, এই তত্ত্বের অর্থ আদালত নিজেদের রাষ্ট্রপতি কিংবা রাজ্যপালের জায়গায় বসাচ্ছে। কারণ, তাঁরা সময়সীমা লঙ্ঘন করেছেন। কিন্তু এমনটা হতে পারে না এবং সংবিধানেও এমন কিছু বর্ণিত নেই।’
বিচারপতিরা আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালকে বিল প্রসঙ্গে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া সংবিধান পরিপন্থী।’ তবে কোনও বিলের ক্ষেত্রে রাজ্য়পাল কিংবা রাষ্ট্রপতি যদি বিনা কারণেই বাড়তি সময় নেন। তখন আদালত তাঁর সীমিত ক্ষমতার ভিত্তিতে রাজ্য়পাল কিংবা রাষ্ট্রপতিকে সেই নিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য একটা সময় বেঁধে দিতেই পারে। তবে এই প্রক্রিয়া সব ক্ষেত্রেই হবে, এমনটা নয়।