এ যেন নেই-হাসপাতাল! বাথরুমের ধারে শুয়ে নগ্ন কোভিড রোগীরা

ওড়িশার (Odisha) এই হাসপাতালে যেন উঠে এল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভাঙন-ছবি। প্রশ্ন উঠেছে, করোনা আক্রান্ত ওই নগ্ন রোগীর মতোই দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দিনে দিনে নগ্ন হয়ে যাচ্ছে না তো?

এ যেন নেই-হাসপাতাল! বাথরুমের ধারে শুয়ে নগ্ন কোভিড রোগীরা
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Updated on: Jun 01, 2021 | 4:26 PM

ময়ূরভঞ্জ: রোগী আছে, বেড নেই। অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে তো অপারেটর নেই। মেঝেতে যত্রতত্র ছড়িয়ে কোভিড রোগী। কেউ বাথরুমের ধারে তো কেউ বারান্দায়। কেউ বা নগ্ন অবস্থায় মেঝেতে শুয়ে। নার্স নেই, ডাক্তার নেই, রোগীর খাবার নেই। এ যেন এক নেই হাসপাতালের ছবি! ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ (Mayurbhanj) জেলার এমন কোভিড হাসপাতালের (Hospital) দৃশ্য কার্যত ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।

ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, কোভিড আক্রান্ত রোগী টয়লেটের ধারে বেসিনের নীচে শুয়ে আছেন। অন্য আরেক জন মেঝেতে নগ্ন অবস্থায় পড়ে আছেন। গত ২৩ মে সেই হাসপাতালে মৃত এক ব্যক্তির আত্মীয় ওই ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন। ময়ূরভঞ্জের বারিপদা শহরের বিভুদত্ত দাস জানান, ২২ মে তিনি তাঁর আত্মীয়কে বারিপদার কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। তাঁর কথায়, “রোগীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে বারিপদা শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে বাঁকিশোল কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ২৩ মে দুপুরে আমাকে জানানো হয় আমার আত্মীয় মৃত্যু হয়েছে।”

এই মর্মে প্রশ্ন তোলেন ওই আত্মীয়া। তিনি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে কটাক্ষ করেছেন। পাশাপাশি ডাক্তার নার্সের অনুপস্থিতি নিয়েও সরব হন। বিভুদত্ত দাস বলেন, “ভিডিয়োতে আমি আমার আত্মীয়কে বিছানায় বসে থাকতে দেখেছিলাম, যে বিছানায় চাদর এবং বালিশ নেই। রোগী কেবল তোয়ালে পরেছিলেন। কয়েকজনকে আবার টয়লেটের সামনে ঘুমাতেও দেখা যায়। ওয়ার্ডে কয়েকটি অক্সিজেন সিলিন্ডার ছিল। তবে অক্সিজেন চালানো মতো কেউ ছিল না। রোগীদের জন্য কোনও নার্স এবং ডাক্তার নেই। কোভিড রোগীদের চিকিত্সার জন্য সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছে। তবে সব টাকা কোথায় যাচ্ছে এবং কার কাছে যাচ্ছে?” তাঁর কথায় হাসপাতালের বেহাল অবস্থার ছবি উঠে এসেছে।

hospital

বারিপদার বিজেপি বিধায়ক প্রকাশ সোরেন বাঁকিশোল কোভিড হাসপাতালে রোগীদের চিকিত্সায় অবহেলার অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, “বেশিরভাগ রোগী অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছেন। চিকিত্সকরা বুঝতে পারেন না রোগীরা কী চান এবং নার্সরা সংক্রমণের ভয়ে তাদের কাছে আসে না। পরিস্থিতি এমন যে, রোগীরা সময় মতো খাবারও পায় না।” ময়ূরভঞ্জের কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেসের সঙ্গে সমঝোতা করে গত বছর হাসপাতাল চালু হয়েছে। ময়ূরভঞ্জের জেলা কালেক্টর ভিনিত ভরদ্বাজ বলেন, সব বিষয়ে নজর রাখার জন্য আগামী দিনে হাসপাতালে সিসিটিভি লাগানোর চেষ্টা চলছে।

করোনার দাপটে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে নাজেহাল দেশবাসী। কিছুতেই রোখ যাচ্ছে না ক্ষুদ্র মারণ ভাইরাসকে। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষয়ের ভরসা ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের। কিন্তু ওড়িশার এই হাসপাতালে যেন উঠে এল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভাঙন-ছবি। প্রশ্ন উঠেছে, করোনা আক্রান্ত ওই নগ্ন রোগীর মতোই দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দিনে দিনে নগ্ন হয়ে যাচ্ছে না তো?

আরও পড়ুন: পর পর দু’দিন দাম বাড়ল পেট্রোল ডিজেলের, স্বস্তিতে নেই আমজনতা