Election Commission: কেন আধার-ভোটার-রেশনকে ‘মান্যতা’ দিতে নারাজ কমিশন?

Election Commission: কমিশনের দাবি শোনার পর আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই সমীক্ষায় স্থগিতাদেশের কোনও প্রয়োজন নেই। কিন্তু কমিশন আধার, ভোটার ও রেশন কার্ডকে সমীক্ষার নথি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। অর্থাৎ বিহারে যে সমীক্ষা চালাচ্ছে তারা। সেখানে ১১টি নথির মধ্য়ে এই আধার-ভোটার-রেশন কার্ডকে রাখার পরামর্শ দেয় আদালত।

Election Commission: কেন আধার-ভোটার-রেশনকে মান্যতা দিতে নারাজ কমিশন?
নির্বাচন কমিশনImage Credit source: Facebook

|

Jul 23, 2025 | 5:07 AM

নয়াদিল্লি: আপনাকে যদি বলা হয়, আপনি যে নাগরিক সেই প্রমাণ জমা দিন। স্বাভাবিক নিয়মেই ভারতের নাগরিক হলে ভোটার কার্ড কিংবা নতুন সংযোজন হওয়া আধার কার্ডটা এগিয়ে দেবেন। হাতের কাছে একান্তই কিছু না পেলে রেশন কার্ড এগিয়ে দেবেন। কিন্তু যদি বলা হয়, এই কোনওটাই আপনার পরিচয় পত্র বা নাগরিক প্রমাণের অংশ নয়? এই কথা সুপ্রিম কোর্টে নির্বাচন আগেই বলেছে। তবে সেটা মৌখিক। এবার তারা যুক্তি দিয়ে সেই রেশন-আধার-ভোটার কেন নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়, তা বুঝিয়ে দিল।

সোমবার দেশের শীর্ষ আদালতে একটি হলফনামা জমা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যাতে তারা বলেছে ভোটার তালিকার জন্য সমীক্ষায় আধার-ভোটার-রেশন, কোনওটাই গ্রহণ করা হবে না। এই তিন নথি ব্যবহারে কেন আপত্তি? সেই ব্যাখ্য়াও দিয়েছে তারা।

গোটা ঘটনার সূত্রপাত ১০ই জুলাই। মহুয়া-সহ বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কমিশনের বিহারে চালানো সমীক্ষার বিরুদ্ধে করা মামলার ভিত্তিতে শুনানি চলে সুপ্রিম কোর্টে। বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে ওঠে সেই মামলা। সেখানেই কমিশন জানায়, আধার কার্ড পরিচয় প্রমাণ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু অন্য বিষয়ের জন্য তার ব্যবহার সীমীত। আধার কার্ড নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। তবে পরিচয়ের প্রমাণ।

কমিশনের দাবি শোনার পর আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই সমীক্ষায় স্থগিতাদেশের কোনও প্রয়োজন নেই। কিন্তু কমিশন আধার, ভোটার ও রেশন কার্ডকে সমীক্ষার নথি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। অর্থাৎ বিহারে যে সমীক্ষা চালাচ্ছে তারা। সেখানে ১১টি নথির মধ্য়ে এই আধার-ভোটার-রেশন কার্ডকে রাখার পরামর্শ দেয় আদালত।

এই ঘটনা দিন দশেকের মধ্যেই শীর্ষ আদালতে হলফনামা আকারে নিজেদের অবস্থান জানাল কমিশন। তাদের দাবি, সংশোধিত ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য আধার, ভোটার কিংবা রেশন কার্ড গণ্য় হবে না। কিন্তু কেন হবে না? তার ব্যাখ্যায় কমিশন জানিয়েছে, সারা দেশে প্রচুর ভুয়ো রেশন কার্ড রয়েছে। সুতরাং, তার উপর ভিত্তি করে ভোটার তালিকা সংশোধন সম্ভব নয়। আর এই ভুয়ো ব বোগাস রেশন কার্ড ভিত্তি করে তৈরি হচ্ছে অবৈধ আধার কার্ড। অতএব সেটির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এমনকি, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের পর থেকে যে আধার কার্ডগুলি দেওয়া হয়েছে, সেখানে এই সংক্রান্ত বিষয়ে স্পষ্ট সতর্কীকরণ রয়েছে বলেও হলফনামায় উল্লেখ করেছে কমিশন। ভোটার কার্ডে তোলা আপত্তির ক্ষেত্রে তাদের যুক্তি, কোনও এক ব্যক্তির এপিক বা ভোটার কার্ড, তার বর্তমান অবস্থার প্রতিচ্ছবি। অর্থাৎ সেই ব্যক্তি কমিশনের চোখে ভোটার। কিন্তু তিনি কীভাবে ভোটার হলেন? বৈধ নাকি অবৈধ পথে? সেই উত্তর ভোটার কার্ড দিতে পারে না। সেহেতু এটিকেও গণ্য করা হবে না।

আধার-ভোটার-রেশন সবই যখন ‘বাতিল’, তা হলে নাগরিকত্বের প্র্রমাণ কে দেবে? নির্বাচন কমিশন কিন্তু জন্ম শংসাপত্র জোর দিচ্ছে। বিহারে কত ভোটার বাদ যাবে সেই নিয়ে এখনও সম্ভবনাময় নানা সংখ্য়া উঠে আসছে। তবে সবটাই সম্ভবনার জায়গায়। বিহার পেরিয়ে এই সমীক্ষা বাংলাতেও হওয়ার কথা। সীমান্ত লাগোয়া রাজ্যে যদি সমস্ত পরিচয়-নথি নাগরিকত্বের প্রমাণ থেকে বাদ যায়, তখন পরিস্থিতি কতটা চিন্তার হতে পারে, তা বলা বাহুল্য।