
নয়াদিল্লি: বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জ্ঞান হারিয়েছেন। হাসপাতালে স্বামীকে নিয়ে এসে এমনই জানিয়েছিলেন এক যুবতী। ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পর বাড়ির লোকও প্রথমে কোনও সন্দেহ করেননি। ভেবেছিলেন দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু, ঘটনা অন্যদিকে মোড় নিল দিন তিনেকের মধ্যেই। পুলিশি তদন্তে উঠে এল, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নয়। পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে ওই ব্যক্তিকে। আর খুন করেছেন তাঁর স্ত্রী ও স্ত্রীর প্রেমিক। ঘটনাটি নয়াদিল্লির।
মৃত ব্যক্তির নাম করণ দেব(৩৬)। গত ১৩ জুলাই করণকে উত্তম নগরের একটি হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর স্ত্রী সুস্মিতা ও পরিবারের লোকজন। সুস্মিতা দাবি করেন, বাড়িতে অসাবধানতাবশত তাঁর স্বামী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। চিকিৎসকরা করণকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। করণের মৃত্যুকে দুর্ঘটনা ভেবে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করতে চাননি পরিবারের লোকজন। করণের বয়স ও মৃত্যুর কারণ বিবেচনা দিল্লি পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করার কথা বলে। সেইসময় সুস্মিতা ও করণের খুড়তুতো ভাই রাহুল এর প্রতিবাদ করেন। তারপরও দিল্লি পুলিশ দীনদয়াল উপাধ্যায় হাসপাতালে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
এর দিন তিনেক পরই ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয়। মৃত করণের ভাই কুণাল পুলিশের কাছে সন্দেহ প্রকাশ করেন, তাঁর দাদাকে খুন করা হয়েছে। এবং খুন করেছেন তাঁর বৌদি ও রাহুল। সুস্মিতা ও রাহুলের মধ্যে ইনস্টাগ্রাম চ্যাটও পুলিশের কাছে তুলে ধরেন কুণাল। যেখানে এই ২ জন খুনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ওই চ্যাট থেকেই জানা যায়, বছর পঁয়ত্রিশের সুস্মিতার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল বছর চব্বিশের রাহুলের। বৌদির সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিজের জ্যাঠতুতো দাদা করণকে খুনের পরিকল্পনা করেন রাহুল।
রাতের খাবারে ১৫টি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে করণকে খেতে দেন সুস্মিতা। করণ অচৈতন্য হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। এমনকি, ওই ২ জন গুগলে সার্চ করে দেখেন, ঘুমের ওষুধ খাওয়ার কতক্ষণ পর মৃত্যু হতে পারে। করণ অচৈতন্য হওয়ার পর তাঁকে ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়। যাতে বোঝা যায়, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই মৃত্যু হয়েছে। এমনকি, করণের মৃত্যুর পর পাশেই শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে সুস্মিতা বলেন, করণ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছেন। তারপরই সবাই পৌঁছে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। পুলিশ সুস্মিতা ও রাহুলকে গ্রেফতার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে করণকে খুনের কথা ধৃতরা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।