
নয়াদিল্লি: ডাক্তারের পরামর্শ মতোই ঘুমের ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন বৃদ্ধা। কিন্তু পরিণতি এতটা ভয়ঙ্কর হবে, তা নিজেও টের পাননি। প্রেসক্রিপশনে লেখা ওষুধের খোঁজ করতে গিয়ে ফাঁকা হল বৃদ্ধার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। তবে এই ঘটনা কিন্তু আজকের নয়। এক বছর আগের। সেই মামলায় সম্প্রতি এবার পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আর সেই ৭৭ লক্ষ টাকা, তার মধ্যে থেকে উদ্ধার হয়েছে মাত্র ৩ লক্ষ টাকা।
ঘটনা দিল্লির বসন্তকুঞ্জের। গত বছর অগস্ট মাসে অনলাইনে বিভিন্ন ওষুধ সংক্র্রান্ত ওয়েবসাইটে নিজের ঘুমের ওষুধের সন্ধান করছিলেন ওই বৃদ্ধা। শিক্ষকতা থেকে অবসর গ্রহণের পর স্নায়ুরোগে আক্রান্ত হন। বলা চলে, ওষুধেই দিন কাটে ওই ৬২ বছরের বৃদ্ধার। নিয়মিত ঘুমের ওষুধ খেতে হয় তাকে। যার অর্ডার দেন অনলাইনেই।
সেই দিন অনলাইনে একটি ওষুধের ওয়েবসাইট থেকে নিজের ওষুধ অর্ডার দিয়েছিলেন তিনি। তারপর ঢোকে একটি ফোন। তাতে তাকে জানানো হয় যে মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো বা এনসিবির কর্তা ফোন করেছেন। স্বাভাবিক বশেই ঘাবড়ে যান ওই বৃদ্ধা। কী কারণে এনসিবি থেকে ফোন এসেছে বুঝতে পারেন না তিনি।
বৃদ্ধাকে জানানো হয়, অবৈধ ওষুধ কেনার অভিযোগে তাকে ডিজিটাল অ্য়ারেস্ট করা হচ্ছে। এছাড়াও বৃদ্ধার বিরুদ্ধে একাধিক মাদক পাচারের অভিযোগ রয়েছে বলে জানায় সেই ভুয়ো এনসিবি কর্তা। এমনকি, অবিলম্বে তাকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৩ লক্ষ টাকা পাঠানোরও নির্দেশ দেয়। তা পালন করেন মহিলা।
এর ১০ দিন পর আবার তার কাছে ফোন আসে। এবার এনসিবি কর্তা নয় সদস্য। তিনি আবার সেই বৃদ্ধার থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। এরপর কয়েক দিনের মধ্যে আবার তিন মহিলা ফোন করেন তাকে। বৃদ্ধার ফোনের স্ক্রিন শেযার করে তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস নিয়ে নেয় তারা। তারপর সরাসরি হাতিয়ে নেন ৭৫ লক্ষ টাকা। সব মিলিয়ে কয়েক দিনের ব্যবধানে ৭৭ লক্ষ টাকার প্রতারণার শিকার হন ওই মহিলা। তারপর দ্বারস্থ হন থানায়।
ন’মাস পর অবশেষে চলতি বছরের জুন নাগাদ দিল্লির মুখার্জিনগর থেকে এই ঘটনায় এক অভিযুক্তকে ধরে পুলিশ। পরবর্তীতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্য়মে আরও তিন জনের খোঁজ পায় তারা। এরপর চলে অভিযান। গ্রেফতার করা হয় আমজাদ, শহিদ এবং শাকিল নামে তিন অভিযুক্তকে। যার জেরে মোট অভিযুক্তের সংখ্যা দাঁড়ায় চার। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মেলে পঞ্চম অভিযুক্তের হদিশ। চলে গ্রেফতারি।