কলকাতা: হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছেন। প্রয়োজনীয় মেশিন লাগানো হাতে-বুকে। কিন্তু মুখে একগাল হাসি। যেন কিছুই হয়নি। ১০৫ বছর বয়সে শরীরে বসানো হয়েছে পেসমেকার। তাতে এতটুকুও বিচলিত নন চিকিৎসক স্মৃতিকণা রায়। সব রোগ-ভয় যেন তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। বেডে শুয়ে অনর্গল বলে যেতে পারেন ৭০-৭৫ বছর আগের কথা। একেই বলে ‘মিরাকল’!
অফুরাণ প্রাণশক্তির এক বিরল নজির গড়ল আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতাল। ১০৫ বছরের বৃদ্ধার দেহে বসানো হল পেসমেকার। অনিয়মিত হৃদস্পন্দন লক্ষ্য করায় চিকিৎসকরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই মতো চলে চিকিৎসা। অপারেশন সফল। আপাতত সুস্থ আছেন তিনি। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন তাঁর আত্মীয়রা। পরিবারের প্রত্যেকের কাছেই তিনি যেন এক অনুপ্রেরণা।
বালিগঞ্জের বাসিন্দা স্মৃতিকণা রায় ছিলেন পেশায় চিকিৎসক। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ স্মৃতিকণা তাঁর সারাজীবনে প্রায় সাড়ে তিন হাজার সদ্যেজাতর প্রসব করিয়েছেন। কাজের সূত্রে একসময় মাদার টেরিজার সান্নিধ্যেও এসেছিলেন তিনি। কোভিড তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি। কোভিডের কথা শুনেই বৃদ্ধা বলেন, ‘না না ভয় পাইনি। ভয় পাব কেন! কত মানুষের চিকিৎসা করেছি একসময়।’
নামেই পেসমেকার বসানো হয়েছে। তাতেও খুব বেশি চিন্তিত নন শতায়ু স্মৃতিকণা। একসময় কীভাবে নিজের সন্তানদের রেখে বিদেশে পড়াশোনা করতে গিয়ছিলেন, কীভাবে হাসপাতালগুলিতে কাজ হত, সাল-তারিখ ধরে সব বলে দিচ্ছেন স্মৃতিকণা রায়। এভাবে ভাল থাকার মন্ত্র কী? প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, ‘কাজের মধ্যে থাক। যত পার মানুষের উপকার কর।’ এতেই এমন প্রাণশক্তি সঞ্চ করেছেন তিনি।